1. info@dainikgonatadanta.com : দৈনিক গণতদন্ত :
বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫, ০৩:২৯ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞাপন:
জরুরী নিয়োগ চলছে, দেশের প্রতিটি বিভাগীয় প্রতিনিধি, জেলা,উপজেলা, স্টাফ রিপোর্টার, বিশেষ প্রতিনিধি, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, ক্যাম্পাস ও বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি বা সাংবাদিক নিয়োগ চলছে।

অনিয়ম-দুর্নীতির রেকর্ড: কর্মচারি প্রধান জাকির হোসেনের গ্রাসে বিসিআইসি!

রিপোর্টারের নাম :
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০২৩
  • ৪৫৯ বার পড়া হয়েছে

 

 

রোস্তম মল্লিক

 

বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ একটি সংস্থা। ১০ থেকে ১২ টি প্রতিষ্ঠান নিয়ে ধুকে ধুকে চলছে এই সরকারী সংস্থাটি। আর্থিক বিবরণী থেকে জানা যায়, বছরের পর বছর লোকসানী প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর হয়েছে বিসিআইসি। বিসিআইসি’র মূল কাজ সার উৎপাদনসহ সমগ্র বাংলাদেশে সার ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ। উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান নানা কারণে আমদানিমুখী প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে একজন চেয়ারম্যান ও পাঁচ জন পরিচালক নিয়ে পরিচালনা পর্ষদ গঠিত। সার বিতরণের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বিসিআইসি সুনামের সাথে প্রায় দুই যুগ ধরে পালন করে আসছে।

বিসিআইসি’র অভ্যন্তরীণ প্রশাসনের প্রধান পদ কর্মচারী প্রধান। নিয়োগ,তদন্ত,পদোন্নতি ইত্যাদিসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় কর্মচারী বিভাগ থেকে পরিচালিত হয়। বিসিআইসি’র সকল স্তরে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই পদটির কাছেই সব প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। পদটি খুবই স্পর্শকাতর। বিসিআইসি’র সার্বিক সফলতা, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মনোবল এই পদে আসীন ব্যক্তির উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। সুতরাং এই পদে মানুষ প্রত্যাশা করে নম্র, ভদ্র, সৎ, কর্মঠ, নিষ্ঠাবান,আইনে বিশেষ জ্ঞান রাখে এমন কর্মকর্তাকে। কর্মী ব্যবস্থাপনার এই পদটির সফলতার উপর নির্ভর করে বিসিআইসি কর্তৃপক্ষের সফলতা। এই পদে আসীন ব্যক্তির ন্যায় বিচার, চৌকষ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আস্থার জায়গা তৈরি করে। অপরদিকে অন্তসারশূণ্য ব্যক্তিত্ব যেমন এই পদটিকে কলঙ্কিত করে তেমনি বিসিআইসি’র সামগ্রিক পরিস্থিকে অন্তসারশূণ্য করে তোলে। কর্মচারী প্রধানের পদটি যেখানে রক্ষকের ভূমিকায় না থেকে ভক্ষকের ভূমিকায় থাকে তখন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হতাশা ব্যক্ত করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। তেমনি আজকের প্রতিবেদনে অসীম ক্ষমতাধর কর্মচারী প্রধান মোহাম্মদ জাকির হোসেনের কর্মকান্ড তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।

 

চাকুরী স্থায়ীকরণের চিঠি আজও পৌঁছায়নি:

বিসিআইসি’র চাকুরী স্থায়ীকরণের পত্রের বিষয়ে বিসিআইসি ও বিসিআইসি নিয়ন্ত্রণাধীন কারখানাসমূহের অন্তত দুইশত জন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, শুনেছি আমাদের চাকুরী স্থায়ীকরণ হয়েছে কিন্তু কি কারণে স্থায়ীকরণ পত্র আমাদেরকে দেওয়া হচ্ছে না সে বিষয়ে আমাদের জানা নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশকিছু অবসর প্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, অবসরের সময় অনেকের ব্যক্তিগত ফাইল থেকে স্থায়ীকরণের চিঠি গায়েব হয়ে যায়। ইচ্ছাকৃত আমাদের হয়রানি করা হয়। অর্থের লেনদেনে আবার সবকিছু ঠিক হয়ে যায়। যেহেতু স্থায়ীকরণের চিঠি কর্মকর্তাদের বা বিসিআইসি ওয়েবসাইটে দেওয়া হয় না সুতরাং এ বিষয়ে সন্দেহাতীভাবে প্রমাণিত হয় যে প্রশাসন বিভাগের নিশ্চয়ই কোন একটা কারসাজি রয়েছে। রয়েছে সিন্ডিকেট। মোহাম্মদ জাকির হোসেন ডিজিএম (প্রশাসন) থেকেই বিসিআইসি’র কর্মচারী বিভাগে রয়েছে। প্রায় ৮ বছরের অধিক সময়ের কর্মকালীন এই কর্মকর্তার নির্দেশেই স্থায়ীকরণের চিঠি কর্মকর্তাদের হাতে পৌঁছায়নি বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন। এছাড়া নিয়োগ শাখায় থাকার সময় তার বিরুদ্ধে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ হলে তাকে সরিয়ে জিএম প্রশাসনের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। বিসিআইসিতে ৩ বছর পর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভাগ পরিবর্তনের নিয়ম থাকলেও মোহাম্মদ জাকির হোসেন তা আজও বাস্তবায়ন করেনি। এ নিয়ম বাস্তবায়িত হলে মোহাম্মদ জাকির হোসেনের সিন্ডিকেট ভেঙে যেতে পারে সে ভয়ে কর্মচারী বিভাগের কর্মকর্তা বদলী হয়না। কর্মচারী বিভাগে চাকুরীরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকুরীর রেকর্ড পর্যালোচনা করলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।

 

নিজের পদোন্নতি কমিটির সদস্য নিজেই:

২০২২ সালের ৮ আগস্ট বিসিআইসি ১৯৩৫(২০২২/৩১) তম বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, বিসিআইসিতে কর্মরত সকল স্তরের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের চাকরির জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণের ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারীকৃত জ্যেষ্ঠতা সংক্রান্ত বিধি-বিধান কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারীকৃত বিধি-বিধানের আলোকে জ্যেষ্ঠতা নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত সকল প্রকার পদোন্নতির কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। বাস্তবায়নে দায়িত্ব দেওয়া হয় কর্মচারী প্রধান মোহাম্মদ জাকির হোসেনকে। বিসিআইসি বোর্ডের এমন নির্দেশনা থাকলেও মোহাম্মদ জাকির হোসেন বিসিআইসি বোর্ডের গৃহীত সিদ্ধান্ত বিসিআইসি কর্তৃপক্ষের কাছে গোপন করে কোনরকম গোজামিলে অর্ধ জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করে গ্রেড-২ পদে নিজের পদোন্নতি আগে নিশ্চিত করেন। কর্মচারী প্রধান পদবীতে বিসিআইসি’র ইতিহাসে কোন কর্মকর্তার পদোন্নতি না হলেও মোহাম্মদ জাকির হোসেন কর্মচারী প্রধান পদবীতে পদোন্নতি নিয়েছেন। সবচেয়ে মজার ব্যাপারটি হলো মোহাম্মদ জাকির হোসেনের পদোন্নতি কমিটির সদস্য-সচিব তিনি নিজেই। বিসিআইসি’র জ্যেষ্ঠতা নিয়ে মামলা করা বাদী পক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান আমরা এসব বিষয় আদালতের নজরে নিয়ে আসব। পূর্ণাঙ্গ জ্যেষ্ঠতা তালিকা না করে পদোন্নতি প্রদানের বিষয়টি বৈধ নয়। আদালত এ পদোন্নতি বাতিল করতে পারেন। আমরা বিসিআইসি’র কর্মকর্তারা ভীষণ বঞ্চিত। সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহারের জন্য কর্মচারী প্রধান মোহাম্মদ জাকির হোসেন এর বিরুদ্ধে ফোজদারি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

 

মোহাম্মদ জাকির হোসেনের পদ ও বদলী:

অভিযোগ রয়েছে মোহাম্মদ জাকির হোসেন নিজের পদকে নিরাপদ রাখতে সিনিয়র সহকর্মীদের তদন্তের জালে জড়িয়ে পদোন্নতি বঞ্চিত করেছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারীকৃত জ্যেষ্ঠতা সংক্রান্ত বিধি-বিধানের ভিত্তিতে বিসিআইসি’র জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ বিষয়ে মামলা হয়েছে। মামলার ফলে সকল প্রকার পদোন্নতি বন্ধ রয়েছে। বিসিআইসি’র কর্মকর্তারা পদোন্নতি বঞ্চিত হচ্ছে। এ মামলার পেছনে মোহাম্মদ জাকির হোসেনের ইন্ধন রয়েছে বলে বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়। কর্মচারী প্রধান পদে কোন বদলী হয়না, পদটি অবিনশ্বর বলে মোহাম্মদ জাকির হোসেন বিভিন্ন জায়গায় মন্তব্য করেন। অবসরের আগ পর্যন্ত কর্মচারী প্রধান পদ থেকে তাকে কেউ সরাতে পারবেন না

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট