নিজস্ব প্রতিবেদক : রূপসায় এক যুগ ধরে একই পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার, এবার হাত-পা ভাঙার হুমকি দিলেন সাংবাদিককে। রূপসা উপজেলায় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এক সাংবাদিককে প্রকাশ্যে গালিগালাজ ও শারীরিক লাঞ্ছনার চেষ্টা করেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহায়ক জাকির হোসেন। শুধু তাই নয়, ঘটনা জানাজানি হলে হুমকি দেন, সাংবাদিককে উপজেলা চত্বরে পেলেই “হাত-পা ভেঙে দেওয়া হবে”।
শনিবার (১ জুন) সকাল ১০টার দিকে রূপসা উপজেলা গেটে দাঁড়িয়ে ছিলেন স্থানীয় দৈনিক ‘গণ তদন্ত’ পত্রিকার প্রতিনিধি ও রূপসা উপজেলা প্রেস ক্লাবের সদস্য আব্দুল মান্নান। তিনি কাজদিয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ ভট্টাচার্যের সঙ্গে কথোপকথনে লিপ্ত ছিলেন। এ সময় অফিস সহায়ক জাকির হঠাৎই পাশ থেকে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন, অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন এবং একপর্যায়ে শারীরিক লাঞ্ছনার জন্য তেড়ে আসেন।
সাংবাদিক মান্নান আত্মরক্ষার্থে সেখান থেকে সরে যেতে বাধ্য হন।
ঘটনার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকাশ কুমার কুন্ডুকে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানান সাংবাদিক মান্নান। এরপরই জাকির আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তিনি মান্নানের ছোট ভাই কাজদিয়া বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল হান্নান এবং আরেকজন দোকানদার কাজী শহীদ এর কাছে হুমকি দিয়ে বলেন,
“তোর ভাইকে বল, যদি উপজেলা প্রাঙ্গণে আসে, তাহলে হাত-পা ভেঙে দেব।”
পরিস্থিতির ভয়াবহতা বুঝে সাংবাদিক মান্নান ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ইউএনও তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, অফিস সহায়ক জাকির দীর্ঘ এক যুগ ধরে রূপসা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে কর্মরত রয়েছেন। এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে তিনি শিক্ষা অফিসের খাবার সরবরাহ, মালামাল ক্রয়সহ নানা সুবিধা এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করে এসেছেন। তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্ব্যবহার ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ থাকলেও রহস্যজনক কারণে কখনোই তদন্ত বা ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
রূপসা উপজেলা প্রেস ক্লাবসহ সাংবাদিক মহল এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। প্রেস ক্লাব নেতারা বলেন
“একজন অফিস সহায়কের এমন দুঃসাহস এই বার্তাই দেয় যে প্রশাসনিক কাঠামো কোথাও বিকৃত হয়ে গেছে। আমরা অবিলম্বে তার শাস্তি চাই।”
তারা আরও বলেন, যদি দ্রুত প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে বৃহত্তর সাংবাদিক ঐক্য গড়ে তুলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়া হবে।
প্রশাসনের কাছে প্রশ্ন —একজন অফিস সহায়ক কি আইন-শৃঙ্খলার ঊর্ধ্বে? নাকি সে কারও ছত্রছায়ায় ‘অপরাধের লাইসেন্স’ নিয়ে রূপসার চত্বরে রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে?