1. info@dainikgonatadanta.com : দৈনিক গণতদন্ত :
শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ০১:১৩ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞাপন:
জরুরী নিয়োগ চলছে, দেশের প্রতিটি বিভাগীয় প্রতিনিধি, জেলা,উপজেলা, স্টাফ রিপোর্টার, বিশেষ প্রতিনিধি, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, ক্যাম্পাস ও বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি বা সাংবাদিক নিয়োগ চলছে।

অভয়নগরে মামলাবাজ মা-মেয়ের গোমর ফাঁস!

রিপোর্টারের নাম :
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর, ২০২২
  • ৩৬৮ বার পড়া হয়েছে

অভয়নগর প্রতিনিধি:

যশোরের অভয়নগর উপজেলার সিদ্দিপাশা ইউনিয়নে শাশুড়ি-শ্যালিকার কাছে পাওনা টাকা চাওয়ায় জামাই-মেয়ে ও নাতিকে জড়িয়ে সাজানো চুরি মামলার অভিযোগ করেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের বহুলালোচিত মা-মেয়ে। ক্যাম্প পুলিশ অভিযোগ তদন্ত করে চুরির সত্যতা না মেলায় মামলা নথিভ‚ক্ত করেন নি। ফলে জামাইকে শায়েস্তা করতে ছোট মেয়েকে দিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করান ধুরন্ধর ওই নারী। কিন্তু আদালতে গিয়ে রাতারাতি পাল্টে যায় অভিযোগের ধরন। থানা পুলিশের কাছে জামাই, মেয়ে ও নাতির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলেও আদালতে গিয়ে তিনি জামাই, জামাইয়ের ভাইপো ও নওয়াপাড়া বাজারের একজন স্বনামধন্য বিশিষ্ট ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে নির্দেশ দেন। তদন্তে নেমে রীতিমত হতবাক বনে যান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই খালিদ হোসেন। তিনি তদন্ত করে চুরির সত্যতা না মেলায় বাদীর সাথে কথা বলেন। এবং মামলার বাদী উপজেলার সিদ্দিপাশা ইউনিয়নের আমতলা গ্রামের বহু বিতর্কিত ও মামলাবাজ খ্যাত জিনিয়া খাতুন ও তার মা লিলি বেগম এমনকি আসামীরা কেউ ওই ব্যবসায়ীকে চিনেন না কখনও দেখেননি মর্মে স্বীকারোক্তি দেন। এবং নওয়াপাড়া বাজারের বহু বিতর্কিত ও একাধিকবার সংবাদের শিরোণাম হওয়া সাংবাদিক পরিচয়দানকারী কথিত হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার বদরুজ্জামানের পরামর্শে ওই ব্যবসায়ীর নাম অভিযোগে অন্তর্ভূক্ত করেছেন বলে বাদীর বরাত দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন। উভয় অভিযোগ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, থানা পুলিশের কাছে দেয়া অভিযোগের বাদী লিলি বেগম এবং আদালতে দায়ের করা মামলার বাদী তার মেয়ে কুষ্টিয়ায় বসবাসরত জিনিয়া খাতুন। থানা পুলিশের কাছে দেয়া অভিযোগে লিলি বেগম দাবি করেন, ঘটনার দিন গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে তিনি একাই বাড়িতে ছিলেন। রাত আটটার দিকে তার জামাই আজিজুল ইসলাম, মেয়ে লাভলী বেগম ও নাতি নাস্তাইন তাকে দেখতে আসে। এসময় তারা খাবারের সাথে অচেতন পদার্থ মিশিয়ে তাকে খাইয়ে নগদ টাকাসহ ১ লাখ ১০ হাজার টাকার স্বর্ণালঙ্কার চুরি করে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তারা তার হাত-পা বেঁধে রেখে যায়। গভীর রাতে লিলি বেগমের স্বামী আতিয়ার রহমান বাড়ি ফিরে তাকে উদ্ধার করে। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, খুলনার ফুলতলা উপজেলার দামোদর গ্রামের মৃত-আকুব্বর সরদারের ছেলে আতিয়ার সরদার লিলি বেগমের তৃতীয় স্বামী। এ ঘরে তার কোন সন্তান নেই। পূর্বের দুই স্বামীর ঘরে দু’টি কন্যা সন্তান রয়েছে। আতিয়ার সরদারের প্রথম স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততী রয়েছে। তিনি তাদের সাথে বসবাস করেন। কালে-ভদ্রে লিলি বেগমের বাড়িতে যান। এদিকে জিনিয়া খাতুন আদালতে দেয়া অভিযোগে দাবি করেন, ঘটনার দিন গত ২ সেপ্টেম্বর তিনিসহ তার মা, বাবা বাড়িতে ছিলেন। এসময় তার ভগ্নিপতি আজিজুর রহমান, ভাইপো হাফিজুর রহমান ও নওয়াপাড়া বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন রাত ৯ টার সময় তাদের বাড়িতে যান। তিনি নিজ হাতে তাদের রান্না-বান্না করে খাওয়ান। একপর্যায়ে তারা খাবারের সাথে অচেতন পদার্থ মিশিয়ে তাকেসহ(জিনিয়া) তার বাবা-মাকে খাইয়ে অচেতন করে নগদ তিন লাখ টাকা ও ১ লাখ ৭০ হাজার স্বর্ণালঙ্কার চুরি করে নিয়ে যায়। ভয়াবহ এ কারসাজি এলাকায় জানাজানি হলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার আসামী আজিজুল ইসলাম জানান, তার শ্যালিকা ও শাশুড়ি ঘর করার সময় তার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা ধার নেয়। পাওনা টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করায় তারা এ চক্রান্ত শুরু করেছে। শাশুড়ি ও শ্যালিকাকে মামলাবাজ আখ্যা দিয়ে তিনি জানান, ইতিপূর্বের তারা তাদের আত্মীয় স্বজনের নামে একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে ও টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। মামলার সাক্ষি স্থানীয় ইউপি সদস্য আকরাম হোসেন বলেন, পরিবারটি এলাকায় ব্যাপকভাবে বিতর্কিত। চুরির ঘটনাটি সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। আমতলা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বলেন, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। পারিবারিক জমিজমা ও টাকা পয়সা লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এমন অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে লিলি বেগমের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমার স্বামীকে খাওয়াইনি। আমার মেয়ে ও আমাকে অচেতন করে সব চুরি করে নিয়ে গেছে। এক প্রশ্নে তিনি বলেন, কাকে খাওয়াইছে আর কাকে খাওয়াইনি আমি এসবের কিছু জানিনা। আমার মেয়ের মামলা সেই সব জানে। মামলার বাদি জিনিয়ার সাথে কথা বলতে একাধিকবার তার ফোনে ফোন করলে প্রতিবারই তার মা রিসিভ করে। তার সাথে যোগাযোগের কোন মাধ্যম না পাওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যশোর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের উপ-পরিদর্শক খালিদ হোসেন বলেন, চুরির সত্যতা মেলেনি। তবে টাকা পয়সা ও জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধীতার তথ্য মিলেছে। এক প্রশ্নে তিনি বাদীর বরাত দিয়ে বলেন, দৈনিক ইত্তেফাকের সাংবাদিক পরিচয়দানকারী অভয়নগরের বদরুজ্জামান নামের এক ব্যক্তির পরামর্শে ব্যবসায়ী ফারুক হোসেনের নাম মামলায় অন্তর্ভূক্ত করেছেন বলে বাদি তাকে জানিয়েছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট