এস এম মনিরুজ্জামান পিরোজপুর প্রতিনিধি
ইন্দুরকানীতে জাল স্বাক্ষর দিয়ে শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ইন্দুরকানীর দক্ষিণ ইন্দুরকানী সপ্তগ্রাম সম্মিলনী আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসীম কুমারের বিরুদ্ধে শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে একাধিক জালিয়াতির অভিযোগে তার নভেম্বর মাসের বেতন স্থগিত করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ে ২০০৪-এর ২৮ অক্টোবর মাহামুদা খানমকে সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১৩ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ব্যানবেইজ জরিপে ওই শিক্ষিকার নাম রয়েছে। কিন্তু ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত হলে মাহমুদা খানমের স্থলে মোহর আলী মৃধা নামে এক শিক্ষকের নাম এমপিওভুক্ত হয়।
স্বাক্ষর জালিয়াতি করে মাহমুদা খানমের স্থলে মোহর আলীকে এমপিওভুক্ত করেন তিনি। ঘটনাটি জানতে পেরে মাহমুদা প্রথমে মাউশিতে ও পরে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন। সেই অভিযোগ বর্তমানে উপ-পরিচালক, মাউশি, বরিশাল মহোদয়ের কাছে তদান্তাধীন আছে।
এছাড়াও চাকুরি বঞ্চিত সৌরভ মিস্ত্রিরসহ অনেকেই জানান, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিলে বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদন করি। প্রধান শিক্ষক আমাদের ৩ বার পরীক্ষার তারিখ দিয়েও পরীক্ষা স্থগিত করে দেন। পরে কৌশলে কমিটির স্বাক্ষর জাল করে অন্য লোক নিয়ে নেন। কিছুদিন পর জানতে পেরে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করলে তদন্তের সত্যতা পাওয়া যায়।
পরে শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিচালক কাওছার আহমেদ প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন এবং অনিয়মতান্ত্রিকভাবে সম্পন্ন অফিস সহকারীর নিয়োগ বাতিল করে অধিদপ্তরকে অবহিতকরণের নির্দেশ প্রদান করা হয় ও প্রধান শিক্ষকের বেতন স্থগিত করা হয়। ওই প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী হিসাবে রনজিৎ ডাকুয়া ২০০২-এর ৬ অক্টোবর যোগদান করেন এবং ২০২০ সালের মে মাস পর্যন্ত ওই পদের বেতন-ভাতা উত্তোলন করেন।
কিন্তু একই ব্যক্তিকে ওই প্রতিষ্ঠানের সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসাবে ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে নিয়োগ দেখানো হয়। ব্যানবেইজের তথ্যানুসারে গৌতম বালা নামে একজনকে সহকারী শিক্ষক বাংলা পদে ২০০৪-এর ৩০ নভেম্বর নিয়োগ দেখানো হয়। আবার একই পদে অর্থাৎ বাংলা বিষয়ে গোলক চন্দ্র অধিকারী নামে একজনকে ২০০৪-এর ২৪ অক্টোবর নিয়োগ দেখানো হয়।
মাহমুদা খানম জানান, আমি ২০০৪ সালে বিধিমতো নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ওই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে থাকি। পরে প্রধান শিক্ষক ২০১৯ সালে জালিয়াতি করে আমার স্থলে মোহর আলী মৃধা নামে একজনকে এমপিওভুক্ত করিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক অসীম কুমার জানান, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্ত চলছে। তবে কি কারণে আমার বেতন বন্ধ হয়েছে তা আমি জানি না।
পিরোজপুর জেলা শিক্ষা অফিসার ইদ্রিস আলী আযীযী জানান, ‘দক্ষিণ ইন্দুরকানীর প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই বিষয়ে ২ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ আমার কাছে একটি তদন্ত চলছে। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে আমি রিপোর্ট প্রদান করব।’