1. info@dainikgonatadanta.com : দৈনিক গণতদন্ত :
বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ০২:০৮ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞাপন:
জরুরী নিয়োগ চলছে, দেশের প্রতিটি বিভাগীয় প্রতিনিধি, জেলা,উপজেলা, স্টাফ রিপোর্টার, বিশেষ প্রতিনিধি, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, ক্যাম্পাস ও বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি বা সাংবাদিক নিয়োগ চলছে।

কালকিনিতে ক্ষমতা পেয়েই সরকারি সম্পত্তি দখলবাজি এমপি তাহমিনার স্বজনদের 

রিপোর্টারের নাম :
  • প্রকাশিত: বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৩১৭ বার পড়া হয়েছে

 

মাসুদ হোসেন খান :

 

সরকারি জমি, নদীর তীরের গাইড বাধ, ফুটপাত দখল করে রাতারাতি নিত্যনতুন অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠছে মাদারীপুরের কালকিনিতে। থানার উত্তর পাশ থেকে শুরু করে পুরাতন বাজার খেয়াঘাট দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মান করার হিড়িক পরেছে পালরদী নদীর পাড়ে সরকারি ফুটপাথ,নদীর তীরের গাইডবাধ,খেয়াঘাট, দখল করে স্থাপনা তৈরি শুরু করেছেন স্থানীয় সদ্য নির্বাচিত সতন্ত্র সংসদ সদস্য তাহমিনা বেগমের আত্মীয়স্বজন, সমর্থক, ক্যাডার বাহিনী ও সুবিধাভোগীরা। অবশ্য দখলদার স্থাপনা নির্মাণকারীরা বলছেন, তারা তাদের মালিকানাধীন জায়গাতে স্থাপনা তুলছেন এবং উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েই এসব নির্মাণ করেছেন তারা । তবে উপজেলা প্রশাসন বলছে, এসব অবৈধ স্থাপনা দ্রুতই উচ্ছেদ করা হবে। এ লক্ষ্যে একটি তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।

 

এ ব্যাপারে নবনির্বাচিত সতন্ত্র সংসদ সদস্য তাহমিনা বেগম জানান, তিনি বা তার স্বজনরা কোনো অপকর্মের সঙ্গে জড়িত নন। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দায়িত্ব প্রশাসনের। প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

 

অবৈধ স্থাপনার কারণে মরে যেতে পারে পালরদী নদী, বন্ধ হতে বসেছে হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী নদীপথে মালামাল উঠানামার খেয়াঘাট ও নদী বন্দর, ফলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জলপথে মালামাল পরিবহন বন্ধ হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

 

নদীর পাড়ের ফুটপাথ দখল করে স্থাপনা তৈরি শুরু করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্যের আত্মীয়স্বজন, সমর্থক ও সুবিধাভোগীরা।

 

তীর ও তীরে থাকা ফুটপাথ দখল করে অনেকগুলো অবৈধ স্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য তাহমিনা বেগমের চাচাতো ভাই,ভাতিজাসহ একাধিক আত্মীয়স্বজন নদীর তীর ও ফুটপাথ জুড়ে এসব অবৈধ স্থাপনা নির্মাণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দখল করে ইতোমধ্যেই অবৈধ স্থাপনা তৈরি করেছেন স্থানীয় এমপির চাচাতো ভাই নুরুজ্জামান সরদারের চারটি দোকান (আট শাটার), আরেক চাচাতো ভাই শাহাদাত সরদারের একটি, শহীদ সরদারের তিনটি এবং ভাগ্নে হেমায়েত, টিটু সরদার ও উজ্জ্বল সরদারের একটি করে স্থাপনা। তাদের দেখাদেখি রশিদ বেপারী ও আকবর বেপারী ও একটি করে ঘর নির্মাণ করেছেন। এভাবে আরও কয়েক দখলদার ঘর নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

 

অন্যদিকে সাবেক সংসদ সদস্য ড. আব্দুস সোবাহান গোলাপ জানিয়েছেন, তার সময়ে এরকম দখলের ঘটনা ঘটেনি।

 

 

সরেজমিনে দেখা গেছে, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার কালকিনি পুরান বাজার পালরদী নদীর তীরের স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিযুক্তদের প্রতিক্রিয়ায়

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যবসায়ী ও স্থানীয় জনগণ বলছেন, নির্বাচনে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীর স্লোগান ছিল ভূমিদস্যু, দুর্নীতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে। কিন্তু বর্তমানে তারা ক্ষমতা হাতে পেয়েই অবস্থান পাল্টে ফেলেছেন। নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে তারা যে ক্ষমতা অর্জন করেছেন, তা খাটিয়ে তারা রাতারাতি একাধিক স্থাপনা নির্মাণ করছেন। কেউ ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। নদীর তীর ও তীর সংলগ্ন সরকারের প্রকল্পের আওতায় নির্মিত সৌন্দর্য বর্ধন, নদী ভাঙ্গান রোধ ও পথচারীদের চলাচলের সুবিধার্থে জনস্বার্থে নির্মিত এসব স্থাপনা অবৈধ দখলদারদের দখলের ফলে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া সহ, নদী দূষণ, জলযান চলাচল বিঘ্ন, নদীপথে পন্য পরিবহন ও ঘাট বন্ধ করে দেয়ায় পন্য খালাসে ব্যাঘাতে ফলে ব্যাবসায়ীদের অর্থিক ক্ষতি সহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন সাধারণ পথচারীরাও প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এসব অবৈধ স্থাপনা অচিরেই বৈধ হিসেবে পরিগণিত হতে শুরু করবে। অন্যদিকে পালরদী ক্রমেই পরিণত হবে মৃত নদীতে।

 

এ বিষয়ে বর্তমান এমপি’র চাচাতো ভাই নুরুজ্জামান সরদার বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনকে দেখিয়েই জমিতে ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।’ ফুটপাথ দখল করে এসব ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে কি না, জানতে চাইলে এ প্রশ্নের কোনো উত্তর এড়িয়ে যান তিনি।

 

 

এ বিষয়ে কালকিনির সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. কায়েসুর রহমান বলেন – এসব অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ সম্পর্কে খবর পেয়েছি। এসব স্থাপনার তালিকা করা হচ্ছে। অল্প দিনের মধ্যেই এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।

 

এ বিষয়ে কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার দাস সাংবাদিকদের বলেন – ‘অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের কোনো সুযোগ নেই। উপজেলা প্রশাসন এসবের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেবে। এর আগেও আমরা উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছি।

 

এ বিষয়ে কালকিনি পৌর মেয়র এস এম হানিফ বলেন – অবৈধ স্থাপনাগুলো নির্মাণ করছে বর্তমান এমপির সহযোগীরা। তাদের বিরুদ্ধে কিছু করার বিষয়ে আমি অসহায়। তবে চেষ্টা করছি, যাতে অবৈধ স্থাপনাগুলো না থাকে। অবশ্য এমপির সদিচ্ছা না থাকলে সেটি সম্ভব নয়।

 

এ বিষয়ে সাবেক এমপি ড. আব্দুস সোবাহান গোলাপ বলেন- কালকিনিবাসী চোখের সামনে এসব স্বজনপ্রীতি ও অবৈধ কর্মকাণ্ড দেখছে। তিনি আরো বলেন, নির্বাচনে যারা আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করেছে, তারা ব্যক্তিগত ফায়দা লুটতেই এসব করেছে। একদিন কালকিনিবাসী বুঝতে পারবে তাদের আসল উদ্দেশ্য।

 

এ বিষয়ে বর্তমান এমপি তাহমিনা বেগম সাংবাদিকদের বলেন – এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দায়িত্ব প্রশাসনের। আমি তাদের উচ্ছেদ অভিযানে বাধা দিইনি, দেবও না। প্রশাসনকে বলব উচ্ছেদের ব্যবস্থা নিন।

 

সংসদীয় আসন ২২০ কালকিনি – ডাসার – মাদারীপুর সদর ( আংশিক) – ৩ আসনের সদ্য নির্বাচিত সতন্ত্র সংসদ সদস্য তাহমিনা বেগমের এই দায়সারা এই বক্তব্যের ব্যাখ্যা জানতে পুনরায় তার মুঠোফোনে একাধিক বার কল করেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট