1. info@dainikgonatadanta.com : দৈনিক গণতদন্ত :
রবিবার, ০৪ মে ২০২৫, ১০:৩৫ অপরাহ্ন
বিজ্ঞাপন:
জরুরী নিয়োগ চলছে, দেশের প্রতিটি বিভাগীয় প্রতিনিধি, জেলা,উপজেলা, স্টাফ রিপোর্টার, বিশেষ প্রতিনিধি, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, ক্যাম্পাস ও বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি বা সাংবাদিক নিয়োগ চলছে।

জাবিতে স্বামীকে আটকে রেখে গৃহ-বধূকে গণধর্ষণ ছাত্রলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তারকৃত-৪ জন রিমান্ডে

রিপোর্টারের নাম :
  • প্রকাশিত: সোমবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১৪৫ বার পড়া হয়েছে

 

মাহাবুব মন্ডল, সাভার।

 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক হলে স্বামীকে আটকে বেধে রেখে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্তদের মধ্যে ছাত্রলীগ নেতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

 

গতকাল রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগী গৃহবধূকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়। সেই সাথে আসামিদের ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

 

সাভার মডেল থানার পুলিশ ও আশুলিয়া থানার পুলিশ যৌথভাবে উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, একই বিভাগের হাসানুজ্জামান ও সাগর সিদ্দিকী এবং উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বির হাসান। পলাতক রয়েছে ভুক্তভোগী নারীর পূর্ব পরিচিত মো. মামুনুর রশিদ এবং স্বামীকে আটকে রাখায় সহায়তা ও মারধর করা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ মুরাদ।

 

এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) আব্দুল্লাহিল কাফী এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ভুক্তভোগী নারীর স্বামী আশুলিয়া থানায় ৬ জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন।

 

মামলায় উল্লিখিত ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আবদুল্লাহিল কাফী বলেন, ভুক্তভোগী নারী ও তার স্বামী আশুলিয়ায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে একই বাসায় পাশাপাশি কক্ষে ভাড়া থাকতেন অভিযুক্ত মামুনুর রশিদ। গত শনিবার মুঠো ফোনে ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামীকে মামুন জানান, তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন হলে তার পরিচিত মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে কিছুদিন থাকবেন। পরে তিনি ওই ব্যক্তিকে ক্যাম্পাসে এসে তার সঙ্গে দেখা করতে বলেন। ভুক্তভোগীর স্বামী ক্যাম্পাসে এলে হলের একটি কক্ষে মুস্তাফিজ ও মুরাদের সঙ্গে পরিচিত হন। একপর্যায়ে মামুন ভুক্তভোগীর স্বামীকে জানান, সাভারের একটি ইলেকট্রনিকসের দোকানে তারা কিছু টাকা পাবেন, তবে দোকানদার টাকা দিতে চাচ্ছেন না। ওই টাকার বিনিময়ে ভুক্তভোগীর স্বামীকে বাসার জন্য টিভি, ফ্রিজসহ অন্যান্য আসবাবপত্র নিতে বলেন এবং সমপরিমাণ টাকা মামুনকে দেওয়ার প্রস্তাব দেন।

 

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, কিছুদিন ক্যাম্পাসে থাকবেন বলে ভুক্তভোগীর স্বামীকে মামুনের কাপড় নিয়ে ক্যাম্পাসে আসার জন্য স্ত্রীকে বলতে বলেন। পরে তিনি স্ত্রীকে ক্যাম্পাসে ডেকে আনেন। রাত ৯ টার দিকে ওই নারী ক্যাম্পাসে যান। ভুক্তভোগীর স্বামী, মামুন, মুস্তাফিজ ও মুরাদ মীর মোশাররফ হোসেন হলের সামনে যান। একপর্যায়ে মুরাদ ভুক্তভোগীর স্বামীকে হলের এ ব্লকের ৩১৭ নম্বর কক্ষে নিয়ে পেছন থেকে বেঁধে ফেলেন ও মারধর করেন। পরে মুস্তাফিজ ও মামুন ওই নারীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন গার্ডেনের পাশের জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ওই নারী ও তার স্বামীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনার বিচারের দাবিতে প্রথমে তারা আশুলিয়া থানায় এবং পরে সাভার মডেল থানায় যান।

 

এ ঘটনায় সাভার মডেল থানা ও আশুলিয়া থানার পুলিশ যৌথভাবে তদন্ত শুরু করে বলে জানান পুলিশ সুপার মো. আবদুল্লাহিল কাফী। তিনি বলেন, আসামিদের পালিয়ে যাওয়ায় সহায়তা করার অভিযোগে তিনজনকে ক্যাম্পাস থেকে আটক করা হয়। সাভার থানা এলাকা থেকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমানকে আটক করা হয়। গতকাল রবিবার সকালে মামলা হলে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পলাতক আসামি মুরাদ ও মামুনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

 

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া রাতেই তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান দৈনিক গণতদন্ত ‘কে বলেন, এই ঘটনায় পুলিশ আমাদের কাছে যে কোনো ধরনের সহযোগিতা চাইলে, আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি। হলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, আমরা শাস্তির ব্যবস্থা করব। আমরা শুরু থেকে প্রশাসনকে সহযোগিতা করে এসেছি। গভীর রাতেই আমরা অভিযুক্তদের পালাতে সাহায্যকারীদের নিরাপত্তা অফিসে নিয়ে আসি। পরবর্তীতে আশুলিয়া থানায় তিন জনকেই হস্তান্তর করা হয়।’

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাব্বির আলম বলেন, ‘ঘটনা শুনেছি, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

পুলিশ পরিদর্শক আব্দুর রাশিদ বলেন, ‘ভুক্তভোগী থানায় উপস্থিত হয়ে ঘটনা জানিয়েছেন। আমরা প্রাথমিক তদন্তের কাজ চলমান রেখেছি। পলাতক একজনসহ চারজনকে ধরা হয়েছে। ভুক্তভোগীর লিখিত বক্তব্য ও শারীরিক আলামত সংগ্রহ করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট