নিউজ ডেস্ক:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার হলুদ সাংবাদিক চক্রের একজন পুলিশের সোর্স মাজেদ ভূইয়া ওরফে খোকন। বিগত বেশ কয়েকদিন যাবৎ তিনজন গণমাধ্যম কর্মীর বিরুদ্ধে হলুদ সাংবাদিক চক্রের দলটি ভুয়া ও বানোয়াট নিউজ করে আসছে। সে দলের একজন অন্যতম সদস্য সোর্স মাজেদ বা খোকন। যার জীবনের শুরু হয়েছিল দারোয়ানী চাকুরীর মাধ্যমে। তবে বেশিদিন টেকেনি সেই চাকুরী। কর্মস্থলে চুরি করে হাতেনাতে ধরা পড়ে চাকুরী হারায় ঐ ভুয়া সাংবাদিক বা সোর্স মাজেদ। এরপর বিভিন্ন লোক মারফতে সে সোনারগাঁও থানা ও অন্য কোন এক থানায় পুলিশের সোর্স হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছিলো।
সেই সুবাদে সোর্স মাজেদ নামে ব্যাপক পরিচিতিও লাভ করেছিলো। তাছাড়া সোর্স থাকা অবস্থায় বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে আতাত করে মাদক কারবারিও চালতো বলে জানা গেছে, এমনকি পুলিশের ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন মাদক কারবারিদের নিকট হতে টাকা উপার্জন করতো বলেও গুঞ্জন রয়েছে। বর্তমানে কেন্দ্রীয় পুলিশ হেডকোয়ার্টারের নির্দেশনা অনুযায়ী সোর্স পেশাটি বাতিল করার ফলে সে নিতান্তই বেকার হয়ে পড়ে, এরপর সংসার চালাতে অন্য কোন পেশায় না গিয়ে শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও সাংবাদিকতাকেই বেছে নেয়। গত ১ বছরে সাংবাদিক পরিচয়ে নিজের মোরগ উন্মোচনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সর্বত্র। বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে সোর্স মাজেদ পাঁচটিরও অধিক নামি বেনামী পত্রিকার পরিচয়পত্র ব্যবহার করে সাধারণ জনগণকে হয়রানিতে ফেলছে। যেহেতু পূর্বে থেকে সে সোর্স হিসেবে কর্মরত ছিলো সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এখনো সোনারগাঁও থানায় দায়েরকৃত বিভিন্ন সাধারণ ডায়েরি, অভিযোগ বা মামলার কাগজ পুলিশের নজর ফাঁকি দিয়ে গোপনে সূক্ষ্ম কৌশলে সংগ্রহ করে এবং নথিতে থাকা বাদী – বিবাদীর পরিচয় বা মোবাইল নাম্বার নিয়ে তাদের ব্ল্যাকমেইল এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে আসছে। এমনকি থানা থেকে নথিপত্র সংগ্রহ করার সময় কোন পুলিশ সদস্য বাধা দিলে সোর্স মাজেদ তাকে সাংবাদিক পরিচয়ে ভয় দেখাতো ও চাকরি বদলির হুমকি দিতো। ফলে সোনারগাঁও থানায় কর্মরত বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য তার এসব কর্মকান্ডে ক্ষিপ্ত ও অতিষ্ঠ।
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ কমবেশ সোনারগাঁয়ের সকল গণমাধ্যম কর্মীগন অবগত রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় সোর্স মাজেদের ব্ল্যাকমেইল স্কিমের পরবর্তী টার্গেট জাতীয় দৈনিক আমার সময় পত্রিকার সোনারগাঁ প্রতিনিধি মোঃ ফাদুল ইসলাম।
এবিষয়ের সাংবাদিক ফাহাদুল ইসলাম বলেন, গত ৩’ই এপ্রিল রাত আনুমানিক ৯:০০টায় আমি সোনারগাঁও থানা সংলগ্ন ব্রীজের উপর বসে আরো দুইজন গণমাধ্যমকর্মী ও থানা সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা একজন ব্যবসায়ীর সহিত অলস সময় কাটাচ্ছিলাম। এমতাবস্থায় সোর্স মাজেদ ভূইয়া নিতান্তই একা একা পায়ে হেটে ব্রীজের এক প্রান্ত থেকে মহল্লার ভিতরের দিকে যাচ্ছিলো। ঐ সময় আমাদের মধ্যে থেকে কেউ সোর্স মাজেদের সাথে কথা বলেনি বা তাকে ডাকেনি এমনকি সেও নিজে থেকে আমাদের নিকট আসেনি। অন্যদিকে আমরা আমাদের আভ্যন্তরীণ কথা বার্তায় মনোনিবেশ ছিলাম। এর দুইএকদিন পর আচমকাই বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশিত হতে দেখি এবং প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমেই জানতে পারি যে সোর্স মাজেদ আমার বিরুদ্ধে সোনারগাঁও থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে। এমনকি অভিযোগে উল্লেখ করে, আমি নাকি তাকে ঐদিন উপস্থিত আমার পরিচিত ব্যবসায়ী, সহপাঠী ও বিভিন্ন এলাকাবাসীর সম্মুখে প্রাণনাশের হুমকি দেই। যা কিনা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। এমনকি মিথ্যা ঘটনাটিকে সোর্স মাজেদ ও তার অন্যান্য হলুদ সাংবাদিক সহপাঠীগণ বিভিন্ন অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় সংবাদপ্রকাশের মাধ্যমে বাস্তবে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে ফাহাদুল ইসলাম জানান।
তাছাড়া আরো বলেন, এরপর গত ৫’ই এপ্রিল আনুমানিক রাত সাড়ে নয়টায় (৯:৩০) হঠাৎ সোর্স মাজেদের সাথে আমার সোনারগাঁও থানার সম্মুখে দেখা হয়। অতঃপর মিথ্যা অভিযোগের কারণ জানতে চাইলে সোর্স মাজেদ বলে, আচ্ছা বিষয়টা আমি দেখতেছি, অভিযোগ সত্য অথবা মিথ্যা যাই হোক আমি এটা প্রত্যাহার করে নিবো, এর বিনিময়ে আমাকে বিশ হাজার (২০,০০০) টাকা দিতে হবে। অন্যথায় অভিযোগ বহাল থাকবে ও একের পর এক বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তোমার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশিত হতে থাকবে।
অতঃপর সোর্স মাজেদের দাবীকৃত টাকা দেওয়ার বিষয়টি আমি অস্বীকার করলে সে তার সাংবাদিক সংগঠন (সোনারগাঁও জার্নালিস্ট ক্লাব) এর সভাপতির সাথে বিষয়টি নিয়ে মীমাংসার উদ্দেশ্যে যোগাযোগ করার কথা বলে চলে যায়।
এবিষয়ে সোনারগাঁও থানায় সোর্স মাজেদ ভূইয়া খোকনের বিরুদ্ধে ফাহাদুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অতঃপর সোনারগাঁও থানা অফিসার ইনচার্জ বলেন, বিষয়টি দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।