নুর মোহাম্মদ সবুজ,
সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী) প্রতিনিধি: নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে গত ২ বছর থেকেই স্বাধীনতা দিবস,বিজয় দিবস,শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সহ অন্যান্য জাতীয় দিবসেও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় না। যা রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত ও শহীদ’দের প্রতি চরম অবহেলা অবজ্ঞা ছাড়া আর কিছুই না। রাতে সেখানে মাদক সেবিদের আড্ডাখানায় পরিনত হয়ে চলে যতসব অনৈতিক কাজ। এ নিয়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, ছাত্র শিক্ষক ও সচেতন মহল ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।
মঙ্গলবার ২১ শে ফেব্রুয়ারি’২৩ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস (মহান শহীদ দিবস) উপলক্ষে সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবি সংগঠন শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পন করে। রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত মতে যথাযথ মর্যাদায় শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপনে সূর্যোদয়ের পরপরই সকল সরকারি অফিস, আধা সরকারি অফিস, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত উত্তোলনের নিরিক্ষে সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইসমাইল হোসেন এর ১৬ ফেব্রুয়ারি’২৩ স্বাক্ষরিত আমন্ত্রনপত্রে উল্লেখ্ থাকলেও নিজের তত্বাবধানে থাকা সোনাইমুড়ী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত উত্তোলন করা হয়নি। ২১ ফেব্রুয়ারি'২৩ মঙ্গলবার দুপুর ১ টায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় প্রধান ফটকের কলাপসিবল গেইটে তালা ঝুলানো,পতাকা উত্তোলনের দুটি স্ট্যন্ড সুনসার পতাকা বিহীন দাড়িয়ে আছে। সিঁড়ির পাশে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি অপরিচ্ছন্ন ও ধুলোবালির স্তুপ, সিড়ির নিচে পুরোনো কাঁথা ও অর্ধ পুরাতন দুটি বিছানা পাশেই পড়ে আছে বিড়ি-সিগারেটের অসংখ্য খোসা সিঁড়ির গোড়ায় জমে উঠেছে জঙ্গল-শ্যাওলা। এসবের দায় কার ? দেখার কেউ নেই ? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জানান, মুক্তিযোদ্ধাদের কমিটি না থাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার,মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার গোলাম মাওলা, ডেপুটি কমান্ডার গোলাম মোস্তফা মুক্তিযোদ্ধাদের যাবতীয় কার্যক্রমের তত্বাবধায়ক হিসাবে দ্বায়িত্বে নিয়োজিত থাকলেও সাবেক কমান্ডার গোলাম মাওলা মুক্তিযোদ্ধাদের নেতা হিসাবে পরিচয় দিয়ে কেবল রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় দিবসে ইউএনও’র পাশের চেয়ারে বসা এবং সকল দপ্তরে তদবির নিয়ে ব্যস্ত থাকে। রাষ্ট্রীয় দিবসে বিশেষ প্রয়োজনেই কেবল মুক্তিযোদ্ধাদের আমন্ত্রন জানান। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্বের দাবি করে নিজের স্বার্থ হাছিল করে। উপজেলা আওয়ামিলীগ সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মমিনুল ইসলাম (বাকের) বলেন জাতীয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে পতাকা উত্তোলন না করা দুঃখজনক, ইউএনও সহ সংশ্লিষ্টদের উচিত ছিল কাউকে দিয়ে কমপ্লেক্সে জাতির পিতার প্রতিকৃতি উপর করা সহ পতাকা অর্ধনমিত উত্তোলন করা। এই ব্যাপারে সাবেক ডেপুটি কমান্ডার গোলাম মোস্তফা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এই দিবসে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনটি ইউএনও’র তত্বাবধানে আছে। তিনি ও সাবেক কমান্ডার সাহেব না ডাকলে আমি কিংবা অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের দিবস উদ্যাপনে অংশগ্রহনের কোন সুযোগ নেই। এই ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার গোলাম মাওলার কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রসঙ্গ এড়িয়ে বরঞ্চ বাজারে এসে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা কিভাবে লাগিয়েছে তা দেখে যেতে এই প্রতিবেদককে পরামর্শ দেন। উপজেলা চেয়ারম্যান খন্দকার রুহুল আমিন তার প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা লিখেন,মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সটি মদ গাঁজার আড্ডাখানায় পরিনত হয়েছে।রাতের বেলায় যতসব অনৈতিক কার্যকলাপ হয়। এমন বক্তব্য স্ববিরোধী কি না জানতে চাইলে তিনি প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন প্রসঙ্গ এড়িয়ে বলেন এমনটি আমি আপনার মাধ্যমে জেনেছি। ভবিষ্যতে এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।