মোঃ গোলাম রাব্বী,স্টাফ রিপোর্টার :- পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলার দক্ষিণ মুরাদিয়া মহিলা ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ শাহজালালসহ চারজন শিক্ষক দীর্ঘ ১০ মাস ধরে প্রতিষ্ঠান থেকে অনুপস্থিত থাকলেও নিয়মিতভাবে সরকারি বেতন ও ভাতা উত্তোলন করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে রোববার (২৫ মে) বিকেলে পটুয়াখালী জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও জমিদাতা মাওলানা এবিএম আব্দুল মতিন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, ১৯৮০ সালে তার পৈত্রিক ৩০ শতক জমি দান করে প্রতিষ্ঠিত এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি তার বহু বছরের শ্রমে একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে রূপ নেয়। কিন্তু বর্তমান অধ্যক্ষ মোঃ শাহজালাল ও তার সহযোগী তিন শিক্ষক ১০ মাস ধরে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর না করেই বেতন ও বিভিন্ন বরাদ্দের অর্থ উত্তোলন করছেন। ফলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষ মোঃ শাহজালাল অতীতে বাউফলের বিলবিলাস নেছারিয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে আরবি প্রভাষক পদ থেকে পদত্যাগ করলেও পরে প্রবাস জীবন শেষে বিধি লঙ্ঘন করে আবার একই ইনডেক্স নম্বর ব্যবহার করে চাকরিতে ফিরে আসেন এবং পরবর্তীতে দ্রুত পদোন্নতি নিয়ে সহকারী অধ্যাপক হন। ২০১৫ সালে রাজনৈতিক প্রভাবে দক্ষিণ মুরাদিয়া মহিলা ফাজিল মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ পদে অবৈধভাবে নিয়োগ লাভ করেন।
এবিএম আব্দুল মতিন আরও জানান, গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা আকলিমা আক্তারের সহায়তায় অধ্যক্ষ শাহজালাল তার ছেলে মো. মজিবুর রহমান (উপাধ্যক্ষ) ও কন্যা ফজিলাতুন নেছাকে অন্যায়ভাবে সাময়িক বরখাস্ত করেন। আদালত বরখাস্তের আদেশকে অবৈধ ঘোষণা করলেও তা উপেক্ষা করে তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়।
তিনি অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষ শাহজালাল ও তার ঘনিষ্ঠ শিক্ষকরা সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন এবং মাদ্রাসার চাকরির নামে কয়েকজনের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন, যার মধ্যে ৬ জন এখনো অর্থ ফেরত পাননি। এসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুললেই তাদের মিথ্যা মামলার ভয় দেখানো হয়।
এদিকে, সাবেক অধ্যক্ষ এবিএম আব্দুল মতিন দাবি করেন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে তৎকালীন সরকার পরিবর্তনের পর অধ্যক্ষ শাহজালাল ও তার সহযোগীরা আর মাদ্রাসায় আসছেন না। স্থানীয়দের মতে, অতীতে তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে বহু মানুষের ওপর জুলুম করেছেন, যার কারণে এখন জনরোষের ভয়ে পালিয়ে আছেন।
তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং শিক্ষার্থীদের স্বার্থে মাদ্রাসার সুশাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি জানান।