মোঃ গোলাম রাব্বী,স্টাফ রিপোর্টার:- মাদক একটি ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি, যা যুব সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ নিয়ে নিজ এলাকা মাদকমুক্ত করতে উদ্যোগী হয়েছেন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান রাসেল হাওলাদার।
তার এই কার্যকর প্রচেষ্টা এখন এলাকাবাসীর ভূয়সী প্রশংসা কুড়াচ্ছে। রাসেল হাওলাদার ব্যক্তিগত উদ্যোগে ওয়ার্ডের সচেতন সমাজকর্মীদের নিয়ে একটি মাদকবিরোধী টিম গঠন করেন। এই টিম প্রতিদিন রাতে এলাকায় টহল দিয়ে নজরদারি চালায়। কলাপাড়া থানা পুলিশ ও স্থানীয় চৌকিদাররাও এ কাজে সহায়তা করছেন। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, ইতোমধ্যে তার এই উদ্যোগে একাধিক মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীকে আলোর পথে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা অরেচ বিশ্বাস, কামাল হোসেন, আব্দুল আজিজ খান, মহাসীন খান ও মো. জালাল খান জানান, মাদকসেবীদের প্রভাবে এলাকার শিক্ষার্থীরা বিপদগামী হয়ে পড়ছিল। ইউপি সদস্য রাসেল হাওলাদার প্রতিটি গ্রামে আলাদা আলাদা টিম গঠন করে মাদকবিরোধী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন। ফলে বর্তমানে ওই এলাকা প্রায় মাদকমুক্ত।
এক অভিভাবক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, “আমার ছেলে মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েছিল। রাসেল হাওলাদার ও তার টিমের সহযোগিতায় তাকে মাদক থেকে ফিরিয়ে আনতে পেরেছি।”মাদকবিরোধী টিমের সক্রিয় সদস্য নোয়াব মিয়া ও স্থানীয় চৌকিদার মো. আল-আমিন বলেন, “আমরা নিয়মিতভাবে স্বেচ্ছাশ্রমে এই কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছি। এলাকার মানুষ এখন অনেকটাই স্বস্তিতে রয়েছে। শিক্ষার্থীরাও সন্ধ্যার পর বাড়ির বাইরে ঘোরাফেরা বন্ধ করেছে, ফলে অভিভাবকরাও সন্তুষ্ট।”
রাসেল হাওলাদার জানান, তার ওয়ার্ডে ৬টি গ্রাম রয়েছে। মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে তিনি তিন মাস আগে প্রতিটি গ্রামে একটি করে ৫ সদস্যের টিম গঠন করেন। পাশাপাশি, ১৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি স্ট্রাইকিং ফোর্সও তৈরি করা হয়। যেখানেই মাদকসেবী বা ব্যবসায়ীর উপস্থিতি টের পাওয়া যায়, সেখানেই তারা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন এবং পরে পুলিশের সহায়তায় তাদের আইনের হাতে সোপর্দ করেন। কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুয়েল ইসলাম বলেন, “ইউপি সদস্য রাসেল হাওলাদারের মাদকবিরোধী ব্যতিক্রমী উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। তার এই প্রচেষ্টায় ওই এলাকায় শুধু মাদক নয়, চুরি-ডাকাতির ঘটনাও অনেকটা কমে গেছে। উপজেলার প্রতিটি ওয়ার্ডেই এমন স্থানীয় উদ্যোগ নেওয়া উচিত।”তিনি আরও বলেন, “কলাপাড়ায় প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ বসবাস করে এবং এটি একটি দুর্গম এলাকা। ফলে অনেক সময় ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে দেরি হয়। যদি স্থানীয়রা আরও সচেতন হন, তাহলে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় মাদকসহ সব ধরনের অপরাধ অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।