বুলবুল হাসান, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার : পাবনার বেড়া উপজেলার যমুনা নদীতে চায়না দুয়ারি জালে সয়লাব। মাছের প্রজনন মৌসুমেও অবাধে ব্যবহার হচ্ছে এই নিষিদ্ধ জাল। বর্ষার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েই চলেছে এর ব্যবহার। এতে দেশি প্রজাতির মাছ এবং জলজ জীবের অস্তিত্ব মারাত্মক হুমকিতে পড়েছে । এ বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারির অভাবকেই দুষছেন সাধারণ জনগণ। এদিকে দেশিয় প্রজাতির মাছ সহ অন্যান্য জলজ জীবকুল কে রক্ষায় এখনই কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে ভবিষ্যতে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। বর্ষার পানি বৃদ্ধি-হ্রাস ও মাছের প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা শিং, বেলে, বোয়াল, শোল, টাকি,চিংড়ি, পুঁটি, ট্যাংরা, কইসহ দেশি প্রজাতির সব মাছ চায়না দুয়ারি নামক জালে নিধন হচ্ছে। ফলে ক্রমেই মাছশূন্য হয়ে পড়ছে উপজেলার নদী-নালা ও খাল-বিল।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় বেড়া উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত যমুনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবাধে এই জাল ব্যবহার করা হচ্ছে। শুধু যমুনা নদীতেই নয় আশেপাশের খাল বিল গুলোতেও চলছে চায়না জাল ব্যবহারের মহোৎসব! ভোর হতে রাত অব্দি এ জাল পাতার ধুম পরে যায় নগরবাড়ি,ইসলাম পুর,কাজিরহাট,বসন্তপুর,
পূর্বশ্রীকন্ঠদিয়া, চর সাফূল্লা,
আগবাগসোয়া, বাটিয়াখড়া, মরিচাপাড়া, আউয়াল বাঁধ, জয়নগর, নাকালিয়া, পেঁচাকোলা, মোহন গঞ্জ, চরনাগদার সহ যমুনা নদীর পাশ দিয়ে প্রবাহিত নদীতে। অনুসন্ধানে দেখা যায় প্রতিটি ঘরে-ঘরে এখন চায়না জাল। সহজে মাছ ধরা যায় বলে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও।
এ বিষয়ে নতুন ভারেঙ্গার বাসিন্দা কামাল হোসেন জানান এ জালের ধোঁকায় পড়ে নিংবংশ হতে চলেছে দেশ থেকে সকল প্রজাতির মাছ, কুঁচিয়া,শামুক, জোক,পোনামাছ, কাঁকড়া, কচ্ছপ, বিভিন্ন জলজ প্রাণী। নদী ও বিলের সকল প্রান্তে দেখা যায় এই জলজ প্রজাতি ধংসের মরণ ফাঁদ।
মৎস্যজীবী রামপদ হালদার বলেন এই চায়না দোয়ারি জালের ফাঁদের কারণে নদী-নালা জলাশয়গুলো দিন দিন মাছশূন্য হয়ে পড়ছে। আগে যমুনা নদীতে সারা বছর অনেক মাছ পাওয়া গেলেও এখন বর্ষায়ও মাছ নেই।
স্থানীয় নতুন ভারেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের
(সোনাপদ্মার) প্রতিষ্ঠাতা ও প্রবীণ শিক্ষক এ কে এম আবদুল কালাম বলেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের পুষ্টির প্রধান উৎস সংরক্ষণ এবং জীববৈচিত্র্য যাতে বাস্তুসংস্থানের মাধ্যমে জীব কুলকে রক্ষা করা যায় এবং পৃথিবী কে বাসযোগ্য রাখার মহান ব্রত নিয়ে চায়না দোয়ারি বিরুদ্ধে প্রশাসন সহ সকল কে এগিয়ে আসতে হবে। জলজ জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে ফেলা এই চায়না দোয়ারি নামক মরণ ফাঁদ নিয়ন্ত্রণে সুশীল সমাজের দায়িত্ব রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য অফিসার মোহা. নাসির উদ্দিন জানান মৎস্য সম্পদ রক্ষায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নৌ পুলিশের সাথে কথা বলে দ্রুতই অভিযান পরিচালনা করা হইবে । চায়না দোয়ারি ব্যবহারের প্রভাবে ভবিষ্যতে দেশি প্রজাতির মাছ চরম অস্তিত্ব-সংকটে পড়বে। দেশের মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ভবিষ্য প্রজন্মের জন্য চায়না দোয়ারি ব্যবহার বন্ধে সকল কে আহবান জানান।