রানীশংকৈল প্রতিনিধি (ঠাকুরগাঁও)
ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে এক প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একরামুল মুন্সি (৪৮) নামে এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে। তিনি উপজেলার রাতোর ইউনিয়নের ভেদালি গ্রামের বাসিন্দা এবং মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে।
ঘটনাটি ঘটে গত মঙ্গলবার বিকেলে। অভিযোগ রয়েছে, ১০০ টাকার প্রলোভন দেখিয়ে তরুণীকে ভুট্টার ক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণ করেন অভিযুক্ত একরামুল। ভুক্তভোগী তরুণী জানান, ঘটনার সময় তিনি চিৎকার শুরু করলে একরামুল পালিয়ে যান।
পরদিন বুধবার রাতে স্থানীয় বিএনপি নেতা ও রাতোর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আকতার হোসেন শালিস ডাকেন। সেখানে উভয় পক্ষের কথা শোনার পর অভিযুক্তকে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং সেই টাকা দিয়ে তরুণীকে দুটি ছাগল কিনে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তরুণীর বাবা, একজন ভ্যানচালক, জানান, তিনি বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁও আদালতে মামলা করতে গেলে তার ভাইয়ের মাধ্যমে তাকে ফিরিয়ে আনা হয়। পরে পুনরায় রাতে শালিস বসিয়ে ৪০ হাজার টাকায় আপোষ করতে বাধ্য করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পরিবারটি অসহায় হওয়ায় প্রভাবশালী নেতারা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এমনকি অভিযুক্ত একরামুলের পক্ষ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ লেনদেনেরও অভিযোগ রয়েছে।
একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াত নেতা বলেন, তরুণীর পরিবার চেয়েছিল অভিযুক্তকে জুতার মালা পরিয়ে গ্রামে ঘোরানো হোক অথবা তরুণীকে বিয়ে করতে বাধ্য করা হোক। তবে এসব দাবি শালিসে গৃহীত হয়নি।
আকতার হোসেন বলেন, “মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়নি, শুধু হাত ধরেছিল বলেই শুনেছি। তাই বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি।” তবে আদালত থেকে তরুণীর বাবাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে তিনি সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।
অভিযুক্ত একরামুল মুন্সিকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তার মেয়ে রোজিনা আক্তার বলেন, “আমার বাবা মোবাইল ব্যবহার করেন না। মেয়েটি নিজের ইচ্ছাতেই ভুট্টার ক্ষেতে গিয়েছিল।” তিনি দাবি করেন, পরিবারগুলোর মধ্যে আপোষ হয়েছে।
রানীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরশেদুল হক বলেন, “এ বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং খোঁজ-খবর নেওয়া হবে।”