বিশেষ প্রতিবেদক
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তদবিরবাজ কর্মকর্তা জিয়াউল সিনিয়রদের টপকে পিডি হতে মরিয়া। নেপথ্যে বিনিয়োগ বাজেট তার কোটি টাকার অধিক। সদ্য সমাপ্ত প্রকল্পে করেছেন ব্যাপক দুনীতি আর অনিয়ম ঐ দুনিতির মাধ্যমে আয় করা টাকা আবারো বিনিয়োগে প্রস্তুত দুর্নীতির নতুন রাস্তা খুজতে। বাস্তবে কোন দৃশ্যমান অফিসের কাজ না থাকলেও পিডি নিয়োগ পেতে বর্তমানে তিনি খুব বিজি অফিসার।
সূত্র জানায়, গ্রেডেশনে পিডি হওয়ার পর্যাপ্ত যোগ্যতা না থাকা সত্তেও নতুন প্রকল্প পরিচালক পরিচালক হতে কোটি টাকা বিনিয়োগের মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছেন উপকুলীয় চরাঞ্চলের সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের সাবেক প্রকল্প পরচিালক জিয়াউল হক রাহাত।নিজ জেলা বরিশাল এলাকায় হওয়ায় নিজেকে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজন পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সুযোগ—সুবিধা বাগিয়ে নিতে সারাক্ষন ব্যাস্ত থাকেন এ চতুর কর্মকর্তা। অফিসের দাপ্তরিক কাজ বাদ রেখে সবসময় লবিং গ্রুপিং নিয়ে ব্যস্ত থাকেন এ কর্মকর্তা। তার প্রকল্প মেয়াদ শেষ নোটিশ দেয়া হলেও প্রকল্পের রুম ছাড়ছেন না এই জিয়া। প্রকল্প চালানোর সময় নানান দুর্নীতির সাথে জড়িত ছিলেন এই কর্মকর্তা। উপকুলীয় চরাঞ্চলের সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের সাবেক উপ—প্রকল্প পরিচালক থাকা কালে নানান দুর্নীতি অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে এই অসাধু কর্মকর্তা জিয়াউল। অধিদপ্তরের অফিসারদের মাঝে গুঞ্জন আছে জিয়াউলের মাষ্টার মাইন্ড তদবিরের কারনে তৎকালিন পিডি নিতাই চন্দ্র দাসকে তুচ্ছ কারনে তার পদ থেকে সরিয়ে দেয় মন্ত্রনালয়। পরবর্তীতে জিয়াউল নিজেই পিডি হয়েছেন একই প্রকল্পে।
সূত্র জানায়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নতুন একটি প্রকল্প পাশ হওয়ায় জিয়াউল নিজে পিডি হতে মরিয়া। এ জন্য প্রাথমিক ভাবে পাঁচ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এ কর্মকর্তা জানান, আমাদের যে প্রকল্প পাশ হলো সেটিতে পঞ্চম গ্রেডের অফিসার নিয়োগ দিতে হবে। এখানে জিয়াউল একজন মোষ্ট জুনিয়র অফিসার হিসাবে কিভাবে পিডি হবে। আর এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে যদি আবারো পিডি নিয়োগ দেয়া হয় তাহলে এদিকে যেমন আইনসিদ্ধ হবে না অন্যদিকে প্রকল্প দুর্নীতির আখড়া হিসেবে পরিণত হবে।
উল্লেখ্য এর আগে উপকুলীয় চরাঞ্চলের সমন্বিত প্রণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালক জিয়াউল হকের বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাটের অভিয়োগ উঠে। কাজ না করে সম্পূর্ণ বিল ভাগ বাটোয়ারা করে আত্মসাৎ করার ঘটনা ঘটেছে তার প্রকল্পে। জিয়াউল হক এত জুনয়ির অফিসার হয়েও এটা নিয়ে অধিকাংশ সিনিয়র কর্মকর্তাদের ভিতর ছিল চাপা ক্ষোভ ।
জিয়াউল হক নবম গ্রেডের জুনিয়র কর্মকর্তা হয়ে অসাধু তদবিরের মাধ্যমে পঞ্চম গ্রেডের প্রকল্প পরিচালক হয়েছেন। এমন ঘটনায় প্রণিসম্পদ অধিদপ্তরের সিনিয়র কর্মকর্তাদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
একটি সুত্র দাবি করেন, প্রকল্প পরিচালক জিয়াউল হক নিজেই ঠিকাদার সেজে প্রকল্পের কাজও করেছেন এবং এই বিলের টাকাও তার ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে উত্তোলন করা হয়েছে। তদন্ত করলে যার প্রমান মিলবে।
একদিকে যেমন অন্যান্য সিনিয়রদের টপকিয়ে প্রকল্প পরিচালক হয়ে অফিসারদের মধ্যে জোর গুঞ্জন রয়েছে এবং অফিসারদের মধ্যে এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভের কমতি ছিলনা।
বরিশাল এলাকায় বাড়ি হওয়ায় বিভিন্ন সময় প্রকল্প ভিজিটের নামে নিজ বাড়ি অবস্থান বেশি করতেন এ কর্মকর্তা এছাড়া কক্সবাজার, নোয়াখালি এলাকায় প্রকল্পের এলাকা হলেও সেখানে তিনি নামে মাত্র ভিজিট করেন। তাছাড়া খামারি বাছাই করার ক্ষেত্রেও ব্যাপক অনিয়ম ও স্বজন প্রীতির অভিযোগ এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এছাড়া প্রকল্পের সুফলভোগী খামারিদের যে ঘর বিতারন করা হয়েছে সেটাও খুব নিম্নমানের হওয়ায় প্রকল্প মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অধিকাংশ ঘরের অস্তিত্ব বিলিন। সুফল ভোগীদের যে হাঁস দেওয়া হয়েছে তারও অধিকাংশই আর বেঁচে নেই।
বিশেষ সম্পর্কের সুবাদে সুন্দরী এক নারীকে প্রকল্পের কার্যদেশ দিয়ে যোগ সাজসের মাধ্যমে টাকা আত্নসাত করার অভিযোগ এই দুনীতিবাজ চতুর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
সূত্র জানায়, প্রকল্পের প্রচার প্রচারনার জন্য ভিডিও চিত্র নির্মাণ না করেই যোগসাজসের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিল আত্মসাৎ করার অভিযোগ প্রকল্প পরিচালক জিয়াউল হকের বিরুদ্ধে। সূত্র আরো জানায়, অনন্যা ভিষন নামে একটি ইউটিউভ চ্যানেলে নারীর ক্ষমতায়ন নামের একটি ভিডিও চিত্র পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, উক্ত ভিডিও তে প্রকল্প পরিচালক জিয়াউল হক কে দেখা যায় প্রশিক্ষকের ভুমিকায় প্রশিক্ষন দিতে। এবং একই ভিডিওতে উপকুলীয় চরাঞ্চলের প্রণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রচার প্রচারনার মেসেজ দেয়া হয়েছে। কিন্তু ঐ ভিডিওটি সম্পুর্ন নির্মান ও প্রচারনার ব্যায় বহন করেছের এ সি আই এনিমেল হেলথ নামের বেসরকারী সংস্থা। যার ফলে উক্ত ভিডিওটিতে শিরোনাম করে বলা হয়েছে এ সি আই এনিমেল হেলথ নিবেদিত আর সম্পূর্ন ভিডিওটিতে এসিআই লোগো ব্যাবহার করা হয়েছে। গোপন অপর একটি সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্প পরিচালক জিয়াউল হক ঐ ভিডিওটির নির্মান ও প্রচারের দেখিয়ে ভুয়া বিল ভাওচারের মাধ্যমে সমাপূর্ন টাকা আত্নসাদ করেছে। দায়সারা একটি ভিডিও দেখানো হয় যেটাতে এসিআই কোম্পানি নিবেদন করেছে বলে স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। এ ব্যাপারে এসিআই কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করা হলেও এ বিষয়ে সত্যতা পাওযা যায়।
চলবে…..