কিশোরগঞ্জ : সৈয়দ মহসিন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানকে নিয়ে সম্প্রতি কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক হাজী ইসরাইল মিয়া সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট করেছেন। বুধবার বেলা ১০টায় ফেসবুকে করা এ পোস্টে তিনি ফজলুর রহমানকে সতর্ক করে বলেন, 'প্লিজ! ভাই এবার থামুন।'
হাজী ইসরাইল মিয়া তার পোস্টে উল্লেখ করেন, 'অত্যন্ত বিনয়ের সাথে আপনাকে অনুরোধ করে বলছি আপনি এবার থামুন। আপনি ভালো বলতে পারেন সেটা কিশোরগঞ্জসহ দেশবাসী ভালো করেই জানেন। এটা আপনার গুণ। আপনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এর জন্য আপনাকে সহস্যবার স্যালুট করি। কিন্তু আপনার সাবেক দলের নেতার প্রতি দেওয়া অতিভক্তিপূর্ণ বক্তব্য এখন মানুষের সহ্যসীমা লংঘন করছে।'
তিনি আরও বলেন, 'আপনি যাকে দেবতূল্য বানাবার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন তিনিই সর্বপ্রথম এই জাতীর সাথে চরম বিশ্বাসঘাতকতা করে চরম দুঃসময়ে সমগ্র নিরস্ত্র জাতিকে অস্ত্রের মুখে ঠেলে দিয়ে নিজের এবং পরিবারের সবাইকে সুরক্ষা করেছিলেন। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত দুই লাখ মা বোনের সম্ভ্রমে কেনা স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের কবর রচনা করে একদলীয় বাকশাল গঠন করেছিলেন। মানুষের ভোট এবং ভাতের অধিকার হরণ করেছিলেন। সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা রহিত করেছিলেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সভা সমাবেশ প্রতিবাদ প্রতিরোধের সকল পথ বন্ধ করে দিয়ে এক নেতার এক দেশ এই জুলুমের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন।'
হাজী ইসরাইল মিয়া বিএনপির দায়িত্বশীল কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান, ফজলুর রহমানের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ভূমিকা এবং বক্তব্যের বিষয়ে দ্রুত একটি সুস্পষ্ট সিদ্ধান্তে আসার জন্য। তিনি বলেন, 'এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতি এড়াতে অনতিবিলম্বে ফজলুর রহমানের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ভূমিকা এবং বক্তব্যের বিষয়ে একটা সুস্পষ্ট সিদ্ধান্তে আসা উচিৎ বলে আমি সহ আমার মত লক্ষ কোটি নেতা কর্মী সমর্থক মনে করে। অন্যথায় অনাকাঙ্ক্ষিত বড় ধরনের ভোট বিপর্যয় আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে এতে কোন সন্দেহ নেই। সময় থাকতেই সাবধান হওয়া উচিৎ বলে মনে করছি বিধায় এই লেখার অবতারণা।'
বিএনপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং সামাজিক মাধ্যমের প্রভাব নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের পোস্ট এবং পাল্টাপাল্টি মন্তব্য দলীয় স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হতে পারে। এমন অবস্থায় দলীয় নেতৃত্বকে দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর মতো বিএনপিকেও সামাজিক মাধ্যমের প্রভাবকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে।
ফজলুর রহমানের বক্তব্য এবং তার প্রতিক্রিয়ার এই ঘটনা বিএনপির ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল এবং অভ্যন্তরীণ দলীয় ব্যবস্থাপনায় কোন প্রভাব ফেলবে কিনা, তা সময়ই বলে দেবে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ ধরনের বিবৃতি এবং সমালোচনা দলীয় ঐক্য ও বিপর্যয়ের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে।