সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার তামাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। অভিযোগ অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিদ্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিত থাকেন না, শিক্ষার্থীদের প্রতি আচরণে অসৌজন্যমূলক মনোভাব দেখান এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে, এর ফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান মারাত্মকভাবে অবনতি হয়েছে বলে অভিযোগকারীরা দাবি করছেন।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সকালে স্থানীয়রা একাধিক অনিয়মের ঘটনা তুলে ধরেন- তারা অভিযোগ করেন, গত ১৫ বছর ধরে স্বৈরাচার সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আশ্রয়ে থেকে প্রধান শিক্ষক সাইদুল ইসলাম বিভিন্ন আর্থিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যাচ্ছেন, বিশেষ করে নৈশ প্রহরী আব্দুল্লাহ এবং দপ্তরি আমির হামজার অনুপস্থিতি ও বেতন আত্মসাৎ প্রসঙ্গে এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, নৈশ প্রহরী আব্দুল্লাহ নিয়মিত দায়িত্ব পালন না করেও মাস শেষে স্কুলের নিয়মিত প্রতিদিনের হাজিরা খাতা সাইন করে পুরো মাসের বেতন গ্রহণ করেন,অথচ তিনি বর্তমানে প্রায় ৬৫টি পাওয়ারলুমের মালিক, যার বাজারমূল্য আনুমানিক দেড় কোটি টাকা। সামান্য চাকরি করে এত বিপুল সম্পদের মালিক হওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। একইভাবে, তার বড় ভাই আমির হামজাও দপ্তরি পদে থেকেও মাসে মাত্র এক-দুইদিন উপস্থিত হয়ে স্কুলের নিয়মিত হাজিরা খাতা সাইন করে থাকেন। অভিযোগ রয়েছে, এ দুই কর্মচারী মাসিক বেতনের একটি অংশ প্রধান শিক্ষককে দিয়ে থাকেন, যার কারণে অনুপস্থিত থেকেও তারা অবাধে বেতন তুলছেন।
সাংবাদিকরা বিষয়টি জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক সাইদুল ইসলাম কোনো মন্তব্য না করে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান, একইভাবে, অভিযুক্ত কর্মচারীরাও নিজেদের ‘ব্যবসায়ী’ পরিচয় দিয়ে মন্তব্য এড়িয়ে যান এবং কিছু ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের উদ্দেশে অশালীন ভাষা ব্যবহার করেন।
এলাকাবাসীর দাবি, প্রধান শিক্ষক এবং বিদ্যালয়ের দুই কর্মচারীর যোগসাজশে বছরের পর বছর ধরে এ ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি চলায় শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংস হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার মান কমে গিয়েছে এবং অভিভাবকদের আস্থাও কমে গিয়েছে।
অভিভাবক ও এলাকাবাসী জরুরি ভিত্তিতে শিক্ষা বিভাগ ও প্রশাসনের কাছে তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে বিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা ও মানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা যায়।
এ বিষয়ে বেলকুচি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জানান, “এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।”
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবং স্থানীয় ইউপি সদস্যও একই ধরনের মন্তব্য করেছেন। তারা বলেন, এখন পর্যন্ত বিষয়টি তাদের জানা ছিল না, তবে অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।