মোঃ রাকিব হোসেন, ভোলাঃ-
১০ ডিসেম্বর, ভোলা মুক্ত দিবস, ১৯৭১ সালের এ দিনে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয় আজকের দ্বীপ জেলা ভোলা। দিবসটি উপলক্ষে ভোলা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এক বর্ণাঢ্য র্যালি ও র্যালি পরবর্তী ভোলা জেলা পরিষদের আয়োজনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
র্যালিটি ১০.১৫ ঘটিকায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে জেলা পরিষদ কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। পরে জেলা পরিষদ অডটোরিয়ামে ভোলা মুক্ত দিবস উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব আবদুল মমিন টুলু, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ভোলার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে জনাব মোঃ তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী, জেলা প্রশাসক, ভোলা ও সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিপিএম, পিপিএম, পুলিশ সুপার, ভোলা।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ১৯৭১ সালে তাঁর নেতৃত্বে অকুতোভয় মুক্তিকামী বাঙ্গালী জাতির প্রতি শ্রদ্ধা ও গৌরব গাঁথা সেই সোনালী ইতিহাস স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে ভোলার জনগন যেমনি ভাবে পাকিস্তানী হানাদার থেকে ভোলাকে মুক্ত করেছে তেমনি ভাবে ২০২২ সালের এই দিনে প্রতিজ্ঞা করি আগামীর ভোলা'কে সন্ত্রাস, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ ও মাদকমুক্ত করে জাতির পিতার সোনার বাংলা গোড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে ভোলা জেলা অগ্রগামী হবে।
১৯৭১ সালের এ দিনে আজকের দ্বীপ জেলা ভোলা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয়। সেদিন সকালে পাক বাহিনী ভোলা লঞ্চঘাট হয়ে কার্গো লঞ্চ যোগে পালিয়ে যায়। সকালে এ খবর পেয়ে হাজার হাজার মুক্তিকামী মানুষ ভোলার রাজপথে নেমে আসে। ‘জয় বাংলা ‘তোমার নেতা, আমার নেতা, শেখ মুজিব, শেখ মুজিব’শ্লোগানে শ্লোগানে মুখোরিত করে চারপাশ। বিজয়ের উল্লাসে মেতে উঠে সবাই। ডিসেম্বরের প্রথম থেকেই বিভিন্ন স্থান থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয়ের খবর আসতে শুরু করে। পাকিস্তানী হানাদারেরা নিশ্চিত পরাজয় টের পেয়ে পালানোর পথ খুঁজতে থাকে। ১০ ডিসেম্বর তাদের পালিয়ে যাওয়ার খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে শহরের ভোলার খালে ব্যারিকেড দিয়ে তাদের লঞ্চের গতিরোধ করার চেষ্টা করে মুক্তিকামী জনতা।এসময় তারা গুলি বর্ষণ করতে করতে পালিয়ে যায়। পরে অবশ্য চাঁদপুরের ডাকাতিয়া নদীতে মিত্র বাহিনীর বিমান হামলায় কার্গো লঞ্চটি ডুবে গেলে পাকিস্তানী হানাদেরদের সকল সদস্য নিহত হয়।
এ সময় জনাব আছাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ), ভোলা, জনাব মোঃ মোশারফ হোসেন চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ, ভোলা সদর, বীর মুক্তিযোদ্ধা দোস্ত মাহমুদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শফিকুল ইসলাম, সহ জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের পুলিশ সদস্যগণ, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের সন্তানগন সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।