মাসুদ হোসেন খান :
মাদারীপুর পৌর অফিস সংলগ্ন বটতলা এলাকার সড়কের পার্শ্বে ময়লার ভাগাড় থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতকের নতুন ঠিকানা রাজবাড়ীর সরকারি চাকুরীজীবী নিঃসন্তান দম্পতির ঘরে। বৃহস্পতিবার ( ২২ ডিসেম্বর ২০২২) বিকেলে সাত লাখ টাকা শিশুর নামে ব্যাংক জামানতের মাধ্যমে রাজবাড়ীর সরকারি চাকুরীজীবি নিঃসন্তান দম্পতিকে আদালতের মাধ্যমে দত্তক দেয়া হয়।
জানা যায়, ময়লার স্তুপ থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতককে দত্তক নিতে মাদারীপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন আগ্রহী ১৯ জন দম্পতি। চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মামুনুর রশিদ এর এজলাসে শুনানিতে অংশ নেন আবেদনকারীরা। তিনঘন্টা ধরে চলে শুনানী। প্রথম পর্যায়ে ১৫ জন বাদ পড়লে বাকি ৪ জনের যোগ্যতা অনুসারে আবারো চলে শুনানী। পরে ৭ লাখ টাকা ব্যাংক জামানতে রাজবাড়ী জেলার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কর্মরত মরিয়ম আক্তার ও আজিবর হাওলাদার নিঃসন্তান দম্পতিকে নবজাতক দত্তক দেন মাদারীপুরের আদালত। ওই দম্পত্তির ১৩ বছরের সংসার জীবনে কোন সন্তান নেই বলে জানান তারা।
চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম জানান, মেয়েটির সকল দায়িত্ব ওই দম্পতিকে দিয়েছেন আদালত। পরিচয়হীন শিশুটি নতুন ঠিকানা পাওয়ায় সবাই খুশি। সাতদিনের মাথায় নবজাতকের নামকরণ করা হবে। আর এখন থেকে পুরো দায়িত্ব পালন করবেন দত্তক নেয়া ওই দম্পতি।
দত্তক নেয়া মরিয়ম আক্তার বলেন, আমাদের কোন সন্তান নেই। আদালতের সিদ্ধান্ত মতে আমরা মেয়েটিকে মানুষ করে তুলবো। আমাদের স্বামী-স্ত্রী দুজনের যা সম্পতি আছে, সবকিছুই এই মেয়ের নামে লিখে দিবো।
মাদারীপুর আদালতের আইনজীবি রুবিনা আক্তার বলেন, ১৯ জনের মধ্যে আদালত মরিয়ম ও আজিবর দম্পতিকে বেছে নিয়েছেন। তাদের যোগ্যতা অনুসারে আদালত এই সিদ্ধান্ত দেন। আশা করছি, মেয়েটি নতুন মা-বাবার পরিচয়ে আলোকিত মানুষ হয়ে গড়ে উঠবে।
উল্লেখ্য , গত ( ১৮ ডিসেম্বর ২০২২) রবিবার মাদারীপুর শহরের পৌরসভা অফিস সংলগ্ন বটতলা এলাকার সড়কের পাশ থেকে কম্বলে প্যাঁচানো এক ফুটফুটে নবজাতক উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। কন্যা শিশুটি এখনো জেলা সদর হাসপাতলে চিকিৎসাধীন রয়েছে।