মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরায় ইয়াবাসহ আটক হওয়ার পর পুলিশ হেফাজতে শেখ জুয়েল (৪৫) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। পরিবারের দাবি, তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে পুলিশ। তবে জুয়েলকে বিএনপি কর্মী হিসেবে প্রচার করা হলেও প্রকৃতপক্ষে তিনি আওয়ামী যুবলীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন বলে স্থানীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৪:৩০ টার দিকে বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাঙ্গরা উত্তরপাড়ার মাদক ব্যবসায়ী হেলাল মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালায়। এসময় পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ ৭০ পিস ইয়াবাসহ ৫ জনকে আটক করে। হেলাল মিয়া (৪২), তার স্ত্রী শারমিন ওরফে সখিনা বেগম (৩৫), শেখ জুয়েল (৪৫), খাকন মিয়া (৪৫) এবং মোঃ হানান (২১)। সন্ধ্যায় এসআই তাহের ভূঁইয়া বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন।
রাত ৮টার দিকে শেখ জুয়েল হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ কুমেক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। নিহতের ছোট ভাই ও যুবদল নেতা শেখ শাহপরান রুবেল দাবি করেন, জুয়েলকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে এবং ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চান। তিনি রাতেই কিছু অনুসারী নিয়ে থানার সামনে বিক্ষোভ করেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও বাঙ্গরা পূর্ব ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিক জাকির চেয়ারম্যান বলেন, “নিহত জুয়েল ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও একজন ইন্টারনেট ব্যবসায়ী ছিলেন। কিছু মহল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মিথ্যাচার করে পরিস্থিতি ঘোলা করতে চাচ্ছে। বিএনপির কয়েকজন নেতাও জানান, শেখ জুয়েল ২০০০ সাল থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং কখনো বিএনপির কোনো কর্মসূচিতে অংশ নেননি।
বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ৭০ পিস ইয়াবাসহ ৫ জনকে আটক করা হয়। শেখ জুয়েল হেফাজতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়া হয়, ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কোনো নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি, তার হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে।” কুমেক হাসপাতালের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ডা. মিল্টন কুমার দেবনাথ বলেন, “শরীরে প্রাথমিকভাবে বাহ্যিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। চূড়ান্ত রিপোর্ট তিন মাসের মধ্যে দেওয়া হবে।