সাখাওয়াত হোসেন (তুহিন)
মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন সানাকাদা গ্রামে শতবর্ষী একটি তালগাছ কেটে শতাধিক বাবুই পাখির বাসা ধ্বংস ও ছানা হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে ভুক্তভোগীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সরেজমিনে জানা গেছে, শনিবার বিকেলে সোনাকান্দা গ্রামের মসজিদের পাশের ওয়াকফকৃত জায়গা থেকে একটি শতবর্ষী তালগাছ কেটে ফেলা হয়। দীর্ঘদিন ধরে তালগাছটি বাবুই পাখির নিরাপদ আবাসস্থল ও প্রজননকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। গাছটিতে অসংখ্য ঝুলন্ত বাসা, ডিম ও ছানা ছিল।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আবুবক্কর মোহাম্মদ শামসুল হুদার ছেলে মাহমুদুর রহমান গাছটি কাটেন। এ সময় তাকে সহযোগিতা করেন মীর হাসান ও জাকির হাসান নামের আরও দুই ব্যক্তি। গাছ কাটার ফলে মাটিতে পড়ে যায় অসংখ্য বাবুই পাখির বাসা। এতে ডিম ভেঙে যায় ও ছানাগুলো মারা যায়।
ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দা হাসান আহমদ বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, এমন একটি পরিবেশবান্ধব গাছ কেটে এভাবে পাখির বাসা ধ্বংস করা নিঃসন্দেহে নৃশংসতা। অভিযুক্ত মাহমুদুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “মসজিদের সম্প্রসারণের জন্য গাছটি কাটা প্রয়োজন ছিল, তাই কেটেছি। এ বিষয়ে বাঙ্গরা বাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজুর রহমান বলেন, “বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তদন্ত করে দেখা হবে।
কাম্পানীগঞ্জ সামাজিক বন বিভাগের কর্মকর্তা আবদুল মতিন বলেন, “ওয়াকফকৃত জায়গা হলেও শতবর্ষী গাছ কাটার কোনো সুযোগ নেই। বাবুই পাখির ছানা ও ডিম ধ্বংসের অভিযোগ পাওয়া গেলে বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মা. আবদুর রহমান জানান, “ওয়াকফকৃত জায়গার গাছ কাটতে হলে ওয়াকফ এস্টেট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়। বাবুই পাখির ছানা ও ডিম ধ্বংসের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হবে। পরিবেশবাদী ও সচেতন মহল এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
তারিখ ২২/০৭/২০২৫ইং