খুলনা প্রতিনিধি
মোঃ জাহাঙ্গীর শেখ বর্তমানে রূপসা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রবল প্রতাপশালী নেতা। যিনি বর্তমানে ৪ নং টিএসবি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও একই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি কতটা প্রভাবশালী তা প্রমাণ করতেই মাঝেমধ্যেই উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রোগ্রামে কেউ কোন বিষয়ে তার সাথে দ্বিমত প্রকাশ করলেই পদ-পদবী বিবেচনা না করে অপমান করেন। উদাহরণ হিসেবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার আবুল কাশেম ডাব্লিউকে শারীরিক লাঞ্ছিত করে স্হানীয় সকল পর্যায়ের নেতাদের প্রতিবাদ ও জেলায় গণস্বাক্ষর দিয়ে বিচার চাওয়া সত্ত্বেও কোন শাস্তি পেতে হয়নি।ইতিমধ্যে তার খয়েরখাঁ বনে যাওয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিনয় কৃষ্ণকে গত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে মেম্বার হিসেবে অবৈধভাবে বিজয়ী করতে না পেরে ঢাকায় বিশিষ্ট সাংবাদিক নেতা বুদ্ধদেব হালদার জুয়েলকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে, এলাকায় নিন্দা,প্রতিবাদের ঝড় এবং দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাংবাদিকরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করা সত্ত্বেও তাকে কোন রকম শাস্তি পেতে হয়নি। উচ্চ ভিলাষী জাহাঙ্গীর এবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। টাকা এবং তেলমারা স্বভাব দিয়ে উপর মহল ম্যানেজ করে সে তার লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে পারে বলে স্হানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা আশংকা প্রকাশ করছেন। হঠাৎ লীগের এ নেতা পদ দুটো হাতিয়ে নিলে দলের অপূরনীয় ক্ষতি হবে বলে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদরা শঙ্কায় আছেন।
লোকমুখে জানা যায় এবং বিভিন্ন সময়ে জাহাঙ্গীর নিজেই বলেন ঢাকার মতিঝিল এবং এর আশেপাশে তার কয়েকটি প্লট আছে, এছাড়া প্লাটও রয়েছে। খুলনার অভিজাত আবাসিক এলাকা নিরালায় রয়েছে তার একটি প্লট,এ ছাড়া ফকিরহাটের ফলতিতা বিলে ২০০ বিঘা জমি ছাড়াও এলাকায় প্রচুর জমি ও তার প্রত্যেক বোনকে ৫ টি দোতলা বাড়ি করে দেওয়া আছে।নতুন নতুন গাড়ি পাল্টানো জাহাঙ্গীর এর শেষ কথা কত টাকা লাগবে? মাঝে মধ্যেই অহংকার করে বলে ব্যাংকে তার কোটি কোটি টাকা জমা আছে।
কিন্তু এতো টাকা কোথা থেকে পেল ম্যাচ ফ্যাক্টরিতে কাজ করা খাজা ডাঙ্গা গ্রামের অতি সাধারণ মশিউর রহমান এর ছেলে জাহাঙ্গীর। ৩ বেলা পেট ভরে খেতে না পাওয়া জাহাঙ্গীর কি সত্যি আলাদিন এর চেরাগ পেয়েছে? তবে জানা যায়, ২ ভাই এবং ৫ বোনের অভাবী সংসারে কিছু টাকা উপার্জন এর জন্য ক্লাসের পিছনের সারির জাহাঙ্গীর লেখাপড়া শেষ না করে ঢাকায় একটি সিএন্ডএফ অফিসে পিয়নের পদে চাকরি নেয়, বেতন এতটাই কমছিলো যে তাকে কয়েক বছর দেওয়ানবাগীর উটের খামারের ম্যাচে থাকতে বাধ্য হয়। তখনকার সময়ে মতিঝিল এর আশেপাশে ওটাই ছিলো সবচেয়ে সস্তা ম্যাচ, বাংলাদেশ ব্যাংক এর পিছনে নৌকায় যেতে হতো, কোনো রাস্তা ছিলোনা উটের খামারের ভিতরে ম্যাচ-টি থাকায় সবসময়ই দুর্গন্ধযুক্ত ও স্যাঁত স্যাঁতে থাকতো।
যতটুকু জানা যায় চাকুরী অবস্থায়ই চতুর জাহাঙ্গীর আন্ডাররেটে মাল ক্লিয়ার, কম ঘোষণার বেশি মাল ক্লিয়ার, অবৈধ মাল ক্লিয়ার করা সিন্ডিকেটে সক্রিয় হয়ে উঠে এবং নিজেই একজন সিএন্ডএফ হয়ে যান। ধীরে ধীরে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে মাল খালাসের বিভিন্ন পন্থা আবিষ্কার করে, সরকারি দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নিজেই ঔ সিন্ডিকেট পরিচালনা করতে থাকে। মাত্র ১০ বছরে জাহাঙ্গীর হয়ে যায় কোটি কোটি টাকার মালিক, তখন দুদক বা এতো গণমাধ্যম না থাকায় কোন রকম সমস্যায় পড়তে হয়নি। তবে তদন্ত করলে সত্যতা মিলবে।
টাকার জোরে কোনদিন রাজনীতি না করেই আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকে ম্যানেজ করে হঠাৎ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ হাতিয়ে নেয় যা এখন পর্যন্ত রূপসা উপজেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম কলঙ্ক হিসেবে আলোচিত ও সমালোচিত।কিছুদিন পরেই ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকার প্রার্থী হয়ে যায়, নৌকার জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে অখ্যাত জাহাঙ্গীর হয়ে যায় চেয়ারম্যান।১ম,প্রথম টাকার গরম দেখাতে প্রায়ই বলতো সভাপতি ও চেয়ারম্যান মনোনয়ন নিতেই তার ২ কোটি খরচ হয়েছে। জাহাঙ্গীর এর ছত্র ছায়ায় তার বড়ভাই আলমগীর সাবেক সর্বহারা ও বর্তমান কিছু বিপথগামীকে নিয়ে একটা সন্ত্রাসী দল পরিচালনা করে।এছাড়াও স্থানীয় গুটিকয়েক সাংবাদিক,সাবেক একজন জেলা আওয়ামী লীগ নেতাসহ কিছু বিপথগামীকে সাথে নিয়ে চলছে তার ভাইয়ের দখলবাজি, চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাজি, টেন্ডার সিন্ডিকেট ও শালিশ সিন্ডিকেট। ইতিমধ্যে তাদের সিন্ডিকেট এর জন্য সরকার রাজস্ব লক্ষ লক্ষ টাকা হারিয়েছে। স্হানীয় নীতিবান সাংবাদিকরা এবিষয়ে প্রচুর লেখালেখি করেও কোন লাভ হয়নি।
এ ছাড়াও সে কাজদিয়া বাজার এবং পানের হাট থেকেও অবৈধভাবে টাকা আদায় করে আসছে?
স্হানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা পথচেয়ে বসে আছেন কখন এই জাহাঙ্গীর এর পতনের অপেক্ষায়।তারা বিশ্বাস করেন হঠাৎ লীগ নেতা জাহাঙ্গীর এর পতন হবে, বিতাড়িত হবে , মানুষ জিম্মি দশা থেকে মুক্তি পাবে, বিচার হবে সরদার আবুল কাশেম এবং সাংবাদিক জুয়েল হালদারকে শারীরিক আঘাতের।