লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
মো: রব্বানী ইসলাম
লালমনিরহাট কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি)-তে দায়িত্ব পালনের নামে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সাবেক অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে। দায়িত্বে থাকাকালে তিনি প্রতিষ্ঠানে তৈরি করেছিলেন দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার এক নব্য দৃষ্টান্ত। অভিযোগ রয়েছে, তিনি কোটি টাকারও বেশি সরকারি অর্থ হাতিয়ে কৌশলে গাজীপুরে বদলি হয়ে সরে যান দায়িত্ব থেকে।
তাঁর অপকর্ম ফাঁস হয় দায়িত্ব ছাড়ার পর। ধরা পড়ে নানা অনিয়মের চিত্র। দেলোয়ারের একার পক্ষে এসব সম্ভব না হলেও তাঁর সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে, নিম্নপদস্থ কর্মচারী, যারা প্রতিষ্ঠানের সব অনিয়মে তার ডান-বাম হাত হিসেবে পরিচিত।
সূত্র জানায়, দেলোয়ার হোসেন দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে কোনরূপ নিয়ম-নীতি না মেনে বিভিন্ন অজুহাতে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেন। তার বিরুদ্ধে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৭ লাখ ৪৮ হাজার ৫৮০ টাকার অডিট আপত্তি উঠেছে। এছাড়া শিক্ষক-কর্মচারীদের আইডি খোলা না হওয়ায় বর্তমানে শিক্ষকরা বেতন পাচ্ছেন না।
বর্তমান অধ্যক্ষ আইনুল হক লিখিতভাবে জানান, সাবেক অধ্যক্ষ দায়িত্ব হস্তান্তর না করায় অফিসের গুরুত্বপূর্ণ ড্রয়ারের চাবি, ব্যাংক বুক, ক্যাশ বুক, বাজেট কন্ট্রোল রেজিস্টারসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র আটকে আছে। একইসাথে প্রকল্পভুক্ত কর্মীদের বেতনও তিনি প্রদান করেননি।
অভিযোগে আরও উল্লেখ রয়েছে, দেলোয়ার হোসেন ৯ মার্চ ২০২৫ থেকে ৮ এপ্রিল ২০২৫ পর্যন্ত অফিস না করেও বেতন নিয়েছেন এবং এরপর থেকে তিনি অনুপস্থিত রয়েছেন। বিভিন্ন ট্রেডের মালামালেও রয়েছে ঘাটতি।
অতিথি শিক্ষক ফরিদুল ইসলাম লিখিতভাবে অভিযোগ করে জানান, তার প্রায় দেড় লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে, যা দেলোয়ার হোসেন ইচ্ছাকৃতভাবে পরিশোধ করেননি। বরং তাকে বারবার হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সনাক লালমনিরহাটের সভাপতি শুপান তনার্থদত্ত বলেন, “একজন দায়িত্বশীল পদে থাকা ব্যক্তির এমন দুর্নীতি ও অনিয়ম ক্ষমার অযোগ্য। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেবেন বলেই আমাদের প্রত্যাশা।”
বর্তমান অধ্যক্ষ আইনুল হক এরই মধ্যে মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এবং প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কার্যক্রম সচল রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
লালমনিরহাট প্রতিনিধি/ মো: রব্বানী ইসলাম