আজ শুক্রবার, ১৪ই ফেব্রুয়ারি, পবিত্র শবে বরাত বা ভাগ্য রজনী।
সাইদ গাজী সালথা ফরিদপুর প্রতিনিধি :
ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এ রাতটিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পালন করেন। ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী, এই রাতে আল্লাহ তায়ালা বান্দার তাকদির নির্ধারণ করেন, গুনাহ মাফ করেন এবং রহমতের দরজা উন্মুক্ত করে দেন।
শবে বরাত আরবি ভাষার দুটি শব্দের সমষ্টি— “শব” অর্থ রাত, আর “বরাত” অর্থ মুক্তি। অর্থাৎ, এটি এমন এক রাত যখন আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের গুনাহ থেকে মুক্তির সুযোগ দেন। এই রাতকে লাইলাতুল বরাত বা বরকতময় রজনী বলেও অভিহিত করা হয়।
হাদিস ও ইসলামী ঐতিহ্যে এই রাতের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন— আল্লাহ তায়ালা শাবান মাসের মধ্যরাতে (শবে বরাতে) দুনিয়ার আসমানে নেমে আসেন এবং ঘোষণা করেন:কে আছো ক্ষমাপ্রার্থী? আমি তাকে ক্ষমা করব। কে আছো রিজিক প্রার্থী? আমি তাকে রিজিক দেব। কে আছো বিপদগ্রস্ত? আমি তাকে মুক্তি দেব। এই রাতে আল্লাহ তায়ালা অগণিত বান্দার গুনাহ মাফ করেন। তবে কিছু লোকের গুনাহ মাফ হয় না, যেমন—মুশরিক (যারা আল্লাহর সঙ্গে অন্য কিছুকে অংশীদার করে)বিদ্বেষ পোষণকারীআত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী অহংকারী ও জালিম
শবে বরাতের রাতে অনেক আমল করা হয়ে থাকে, যেমন—নফল নামাজ: এই রাতে বেশি বেশি নফল নামাজ পড়া উত্তম।কোরআন তিলাওয়াত: মহান আল্লাহর বাণী পাঠ করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।তাসবিহ-তাহলিল: “সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বেশি বেশি বলা। তওবা ও ইস্তেগফার: গুনাহের জন্য আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাওয়া।দোয়া: নিজের ও সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর জন্য দোয়া করা।
রোজা রাখা: হাদিসে এসেছে, নবীজি শাবান মাসে বেশি রোজা রাখতেন । তাই ১৫ই শাবান রোজা রাখা উত্তম।
অনেক জায়গায় শবে বরাত নিয়ে কিছু কুসংস্কার ও ভুল ধারণা প্রচলিত আছে, যেমন—আতশবাজি বা পটকা ফোটানো: এটি ইসলামসম্মত নয়।
বিশেষ কোনো খাবারের বাধ্যবাধকতা: হালুয়া-রুটি খাওয়া একটি সামাজিক প্রথা, তবে এটি ইসলামের অংশ নয়।
কবর জিয়ারত: কবর জিয়ারত করা যায়, তবে কবরবাসীদের কাছে কোনো প্রার্থনা করা ইসলামবিরোধী।
শবে বরাত আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত লাভের রাত। এই রাতে আমাদের উচিত বেশি বেশি ইবাদত করা, গুনাহ থেকে ক্ষমা চাওয়া এবং ভবিষ্যতে আল্লাহর পথ অনুসরণ করার সংকল্প গ্রহণ করা। আসুন, আমরা সবাই এ রাতের ফজিলত অর্জনের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করি এবং পরিশুদ্ধ জীবনের পথে চলার চেষ্টা করি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে শবে বরাতের পূর্ণ ফজিলত দান করুন, আমিন।