আজও দুইজন নিরীহ মুসলিম কৃষক নির্মমভাবে নিহত হয়েছেন ভারতের উগ্র হিন্দুদের হাতে। কারণ? তারা মুসলিম ছিল। কোনো অস্ত্র ছিল না, কোনো অপরাধের প্রমাণ ছিল না—শুধু নামটা ‘মুসলিম’, বিশ্বাসটা ‘ইসলাম’। তাই তাদের হত্যা করাটাই যেন এখন বৈধ। ভারত আজ যেন সংবিধানহীন এক দানব রাষ্ট্র, যেখানে ঘৃণা একমাত্র রাষ্ট্রধর্মে রূপ নিয়েছে।

গোটা দেশজুড়ে মুসলিমদের উপর যে সন্ত্রাস চলছে, তা আর ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ নয়—এটা একটি সুপরিকল্পিত গণবিনাশ। ভারতের কিছু মিডিয়া এই নৃশংসতাকে আড়াল করে, প্রশাসন চোখ বন্ধ রাখে, আর ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক শক্তি এই ঘৃণার আগুনে ইন্ধন দেয়।

কিন্তু আজকের এই সম্পাদকীয় শুধু ভারতের বিরুদ্ধে নয়—এই কলমের তির ছুঁড়ে দিচ্ছি গোটা মুসলিম বিশ্বের দিকে।

২০০ কোটি মুসলমান এই দুনিয়ায় বাস করে। আমাদের রাষ্ট্র আছে, অর্থ আছে, সেনাবাহিনী আছে, কূটনৈতিক শক্তি আছে—কিন্তু নেই একটুখানি সাহস, নেই সামান্য ঐক্য। ফিলিস্তিনে শিশুদের গলা কাটা হয়, চীন উইঘুর মুসলিমদের বন্দী করে রাখে, মিয়ানমারে গণহারে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মারা হয় রোহিঙ্গাদের, আর ভারতে? প্রতিদিন চলছে মুসলমান হত্যার উত্সব। তবু বিশ্ব মুসলিমরা ঘুমিয়ে আছে!

আমরা কি শুধু দোয়ার জন্যই বেঁচে আছি? আমরা কি শুধু ফেসবুকে ব্যানার লাগিয়ে প্রতিবাদ করেই শান্ত? একজন মুসলিম হিসেবে আজ আমার মাথা নিচু হয়ে আসে—কারণ, আমরা কিছুই করতে পারছি না। শুধু চুপচাপ মেনে নিচ্ছি আরেকটা লাশ, আরেকটা শোক।

আজ প্রশ্ন তুলি—এই ২০০ কোটি মুসলিমের কেউ নেই যে বিশ্ববিবেককে জাগিয়ে তুলবে? কেউ নেই যে বলবে—Enough is enough!

আমরা যারা মিডিয়ায় আছি, লেখালেখি করি, আমাদের কলমে আগুন থাকা উচিত ছিল। কিন্তু আজ সেই আগুনও যেন নিভে গেছে। রাষ্ট্রীয় মেরুকরণ, ভয় আর কূটনৈতিক চাপ আমাদের মুখ বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ সত্য বলার এই সময়েই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল।

আমরা যারা নিরীহ মানুষের উপর জুলুম দেখে চুপ থাকি, তারাও কিন্তু এই অন্যায়ের অংশীদার। আজ যদি এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে না দাঁড়াই, তাহলে আগামীকাল এই আগুন আমাদের দিকেও আসবে—তখন প্রতিবাদ করার সুযোগ থাকবে না।

তাই এই সম্পাদকীয় শুধু নিন্দা নয়—একটা ঘুম ভাঙানো চিৎকার।

উঠো মুসলিম উম্মাহ, জেগে ওঠো মানবতা। নয়তো কাল ইতিহাস তোমাদেরই কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে।

– এম এইচ মুন্না
প্রধান সম্পাদক
দৈনিক গণতদন্ত