বুলবুল হাসান, পাবনা জেলা প্রতিনিধি : উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার খ্যাত এক সময়ের পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার নগরবাড়ি ঘাট এলাকার নাটিয়াবাড়িতে ধোবাখোলা করোনেশন স্কুল এ্যান্ড কলেজের প্রধান ফটকের পাশে স্থাপিত দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যভিত্তিক জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সব চেয়ে বড় ভাস্কর্যটি।
ভাস্কর্যটি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে নিজ অর্থায়নে স্থাপন করেন অত্র এলাকার কৃতী সন্তান সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজু। তিনি নাটিয়াবাড়ি প্রি-প্রাইমারি স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৭৩ সালে ধোবাখোলা করোনেশন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৭৫ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। ১৯৮০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৮১ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পেশায় ব্যবসায়ী আজিজুল হক আরজু রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় ভাবে যুক্ত আছেন। তিনি বেড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১৪ সালে তিনি পাবনা-২ আসন থেকে প্রথমবারের মতো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
আর বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যটি শৈল্পিক হাতে সম্পূর্ণ করেন অত্র এলাকার তরুণ, গুণী ভাস্কর্য শিল্পী বিপ্লব দত্ত। শিল্পী বিপ্লব দত্ত বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়নের সোনাপদ্মা গ্রামের সন্তান। বাবা প্রয়াত মনোরঞ্জন দত্ত ও মা সন্ধ্যারাণী দত্ত। বিপ্লব দত্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ‘অঙ্কন ও চিত্রায়ন’ বিভাগ থেকে বিএফএ এবং এমএফএ দুটিতেই প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। প্রায় দেড় বছর নিরলস পরিশ্রমের পর নির্মাণ করেন বহুমাত্রিক ও বৈচিত্র্যপূর্ণ এ ভাস্কর্য। যা জেলার মানুষদের ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাগ্রত করছে।
মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কেন্দ্র করে নির্মিত এ ম্যুরালের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম ইতিহাস সম্পর্কে সহজেই জানতে পারছেন বলে মনে করছেন সুশীল সমাজ থেকে শুরু করে শিক্ষাবিদ ও মুক্তিযোদ্ধারা। প্রতিদিন শত শত মানুষ শ্রদ্ধা, ভালবাসায় দেখতে আসেন এ ম্যুরাল।
১০ ফুট উঁচু কংক্রিটের স্তম্ভের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে ১৮ ফুট উচ্চতার ও স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য। দু’পাশে রয়েছে তিনটি করে অতিরিক্ত স্তম্ভ। মূল ভাস্কর্যের এক পাশে ২৬টি কলামের সীমানা বেষ্টনী রয়েছে। এই বেষ্টনীর প্রত্যেকটি কলামে সংক্ষিপ্ত আকারে লিপিবদ্ধ হয়েছে নবাব সিরাজউদ্দৌলা থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ‘৭৫-এ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সপরিবারে ঘৃণ্যতম হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত সচিত্র ইতিহাস।
পাবনা-২ আসনের (বেড়া-সুজানগর আংশিক ) সাবেক সংসদ সদস্য ও ধোবাখোলা করোনেশন স্কুল এ্যান্ড কলেজের সাবেক ছাএ খন্দকার আজিজুল হক আরজু দৈনিক দেশ বাংলা র প্রতিনিধি কে বলেন, এই ভাস্কর্য শুধু একটি ভাস্কর্য নয়, এটি একটি ইতিহাস। ভাস্কর্যের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম এবং সাধারণ মানুষজন ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে পারবে। মহান মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা ভাস্কর্যের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। তিনি আরো বলেন বঙ্গবন্ধুর আর্দশে আমার পথ চলা আমি চাই নতুন প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হোক।