মামুন ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৩ (সদর) আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী শামীম হক নেদারল্যান্ডসের নাগরিক। এমন অভিযোগ করে নির্বাচন কমিশনে প্রার্থীতা বাতিলের জন্য আবেদন করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ।
শুক্রবার এ কে আজাদের পক্ষে তার আইনজীবী মো. গোলাম কিবরিয়া আপিল আবেদন জমা দেন।
গত ৫ ডিসেম্বর মনোনয়ন বাছাইয়ের সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদের লিখিত অভিযোগ করলে রিটার্নং কর্মকর্তা শামীম হকের মনোনয়ন পত্র বাতিল না করে বৈধ ঘোষণা করেন। রিটরিং কর্মকর্তা কামরুল আহসান তালুকদার এ প্রসঙ্গে বলেন, দ্বৈত নাগরিকের অভিযোগ দেওয়ার সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত না থাকার তা আমলে আনা হয়নি। রিটার্নিং কর্মকর্তার এই আদেশের বিরুদ্ধে শুক্রবার আপিল দায়ের করা হয়েছে।
আব্দুল কাদের আজাদের আইনজীবী গোলাম কিবরিয়া বলেন, শামীম হকের নেদারল্যান্ডসের পূর্ববর্তী পাসপোর্ট নম্বর- BESHC8751, জন্ম তারিখ ২১ অক্টোবর ১৯৬০ লেখা আছে। শামীম হক সম্প্রতি তাঁর বাংলাদেশী পাসপোর্ট ইস্যু করার জন্য ফরিদপুর পাসপোর্ট কার্যালয়ে এক দরখাস্ত দাখিল করে। সেই দরখাস্তের ২৫ নং কলামে দ্বৈত নাগরিকত্বের ঘরে সে টিক মার্ক দিয়েছে। ২৬ নং কলামে অন্য দেশের নাগরিক থাকলে সেই দেশের নাম এর জায়গায় নেদারল্যান্ডস উল্লেখ আছে। ২৭ নং কলামে তাঁর বর্তমান নেদারল্যান্ডসের পাসপোর্ট নম্বর BY60F0J74 উল্লেখ করা আছে।
আইজীবী আরো জানান, সংবিধানের ৬৬(২) অনুচ্ছেদ এবং ১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১২(১) (৬) অনুচ্ছেদের বিধান মতে শামীম হক একজন বিদেশী নাগরিক হওয়ায় সে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারে না, সে অযোগ্য প্রার্থী। এছাড়াও, সে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (১২) (২)(ক) অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রদত্ত এফিডেভিটে এই বিষয়টি গোপন করায় তার ঘোষনাটি মিথ্যা ঘোষনা হিসেবে বিবেচিত হবে এবং সে কারনেও তার মনোনয়ন বাতিল হওয়ার কথা।
তিনি আরো বলেন, সংবিধানের ৬৬ (২) (গ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “কোন ব্যক্তি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি তিনি কোন বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেন কিংবা কোন বিদেশী রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করেন’। সংবিধানের উক্ত অনুচ্ছেদের অনুরুপ বিধানই গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১২(১)(৬) অনুচ্ছেদে সন্নিবেশিত হয়েছে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম হক বলেন, আমার আগে একসময়ে নেদারল্যান্ডসের নাগরিকত্ব ছিলো তবে সেটি বাতিলের জন্য আমি যথাসময়ে আবেদন করেছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও রয়েছে আমার কাছে। নির্বাচন কমিশন যদি আমাকে তলব করে তাহলে আমি তথ্য প্রমাণসহ এসব নথিপত্র তাদের সরবরাহ করবো। প্রয়োজনে আমি আইনানুগভাবে মোকাবেলা করবো এবং ইনশাআল্লাহ আমার জয় হবে। তিনি অভিযোগ করেন, আমার নেতাকর্মীদের মাঝে ভুল তথ্য ও বিভ্রান্ত ছড়ানোর জন্যই আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে ও কুৎসা রটনা করছে।