1. info@dainikgonatadanta.com : দৈনিক গণতদন্ত :
শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ০২:২২ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞাপন:
জরুরী নিয়োগ চলছে, দেশের প্রতিটি বিভাগীয় প্রতিনিধি, জেলা,উপজেলা, স্টাফ রিপোর্টার, বিশেষ প্রতিনিধি, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, ক্যাম্পাস ও বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি বা সাংবাদিক নিয়োগ চলছে।

এলজিআরডি মন্ত্রণালয় কি এখন ব্যক্তিগত সম্পত্তি?

রিপোর্টারের নাম :
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫
  • ১৩ বার পড়া হয়েছে

 

বাংলাদেশের প্রশাসনিক কাঠামোর অন্যতম মূল স্তম্ভ—স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় (এলজিআরডি)—আজ যেন একটি অদৃশ্য অথচ নির্মম ছায়া শাসনের করাল গ্রাসে বিপর্যস্ত। যেখানে সংবিধান, প্রশাসনিক নিয়মাবলি ও মন্ত্রণালয়ীয় প্রটোকলের বদলে কর্তৃত্ব পাচ্ছে কয়েকজন প্রভাবশালী ‘অঘোষিত নিয়ন্তা’। যাদের মধ্যে একজন উপদেষ্টা এবং তার নিয়োজিত এপিএস হয়ে উঠেছেন প্রশাসনিক দুঃশাসনের প্রতীক।

প্রশ্ন উঠেছে—কেন, কিভাবে, এবং কার ইশারায় একজন উপদেষ্টার এপিএস ভয়েস রেকর্ড পাঠিয়েই মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বদলির নির্দেশ দিয়ে দেন? শুধু তাই নয়, সেই আদেশ বাস্তবায়ন হয় চোখের পলকে, কখনোবা আদেশের স্ক্রিনশট পর্যন্ত সেই এপিএসের ইনবক্সে জমা পড়ে সম্মানিত কর্মকর্তাদের হাত দিয়েই! এপিএস মোয়াজ্জেমের এই ‘ম্যাজিক পদ্ধতিতে’ প্রশাসনিক আদেশ কার্যকর হওয়ার প্রত্যক্ষ সাক্ষী আমি নিজেই।

এটি নিছক প্রশাসনিক শিথিলতা নয়—এটি একটি মন্ত্রণালয়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার বহির্প্রকাশ। এটি একটি ভয়ংকর ‘ছায়া ক্যাবিনেট’ এর কার্যক্রম, যাদের কোনো সাংবিধানিক স্বীকৃতি নেই, নেই জবাবদিহিতার কাঠামো, নেই জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা। প্রশ্ন হলো, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার অনুমতি, নির্দেশনা কিংবা পরোক্ষ প্রশ্রয় ছাড়া কি একজন এপিএস এতদূর যেতে পারেন?

এ অবস্থায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের পদত্যাগ এখন সময়ের দাবিতে রূপ নিয়েছে। কারণ, ব্যক্তিগত স্টাফের অনিয়ন্ত্রিত ক্ষমতার অপব্যবহার কোনোভাবেই তার দায় এড়ানোর সুযোগ দেয় না। বরং এটি তার ব্যর্থ প্রশাসনিক তত্ত্বাবধান ও নৈতিক জবাবদিহিতার পরিপূর্ণ প্রতিফলন।

অন্যদিকে, এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন দপ্তরে একের পর এক বদলি, আদেশ, সেই আদেশের বাতিল ও পুনর্বহালের নাটক যেন ‘অভিনব চক্রান্ত’। এই নাটকের পরিচালক কারা? মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব, নাকি কোনো উপদেষ্টার ‘সুপার এপিএস’? রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত কি এখন হোয়াটসঅ্যাপ ভয়েসে নির্ধারিত হয়?

এখন প্রশ্ন উঠে—গণমাধ্যমকর্মীরা যখন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের প্রকৃত তথ্য জানতে চায়, তখন কেনো প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়? কেন এত নিরাপত্তা, এত নিয়ন্ত্রণ? মন্ত্রণালয় কি জনগণের করের টাকায় পরিচালিত একটি গণপ্রতিষ্ঠান, নাকি ব্যক্তিগত অফিস?

এই প্রেক্ষাপটে আমরা দাবি করছি—একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং শক্তিশালী তদন্ত কমিটি গঠন করে উপদেষ্টা ও তার এপিএসসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তার ভূমিকা খতিয়ে দেখা হোক। রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তগুলো কীভাবে, কার মাধ্যমে এবং কোন গোপন চ্যানেলে বাস্তবায়ন হচ্ছে, তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য সামনে আনা হোক।

আমরা আর ছায়া শাসন চাই না। এলজিআরডি মন্ত্রণালয় একটি মৌলিক প্রশাসনিক স্তম্ভ—যেখানে নীতি, নিয়ম ও জবাবদিহিতা প্রাধান্য পাবে, ব্যক্তিপ্রভাব নয়। উপদেষ্টা পদে থেকে দায় অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তিনি নিজে আদেশ না দিলেও, তার নিয়োজিত ব্যক্তির অপব্যবহারের দায় তিনিই বহন করবেন—এটাই প্রশাসনিক শুদ্ধতার অনিবার্য চাহিদা।

আজ প্রয়োজন একটিই—উপদেষ্টার পদত্যাগ। কারণ রাষ্ট্র কোনো মোয়াজ্জেম বা ছায়া উপদেষ্টার হাতে জিম্মি থাকতে পারে না। জনগণের দেশ, জনগণের প্রশাসন—এই মৌলিক সত্যে ফিরতেই হবে।

লেখক: এম এইচ মুন্না
প্রধান সম্পাদক | দৈনিক গণতদন্ত

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট