1. info@dainikgonatadanta.com : দৈনিক গণতদন্ত :
সোমবার, ২৬ মে ২০২৫, ০৩:৪১ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞাপন:
জরুরী নিয়োগ চলছে, দেশের প্রতিটি বিভাগীয় প্রতিনিধি, জেলা,উপজেলা, স্টাফ রিপোর্টার, বিশেষ প্রতিনিধি, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, ক্যাম্পাস ও বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি বা সাংবাদিক নিয়োগ চলছে।

হচ্ছে না আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন রাস্তা, তন্তর পর্যন্ত গিয়ে কাজ শেষ

রিপোর্টারের নাম :
  • প্রকাশিত: রবিবার, ২৫ মে, ২০২৫
  • ১৮ বার পড়া হয়েছে

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি :
চার লেন প্রকল্পের কাজে ধীরগতির কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া পর্যন্ত দুই মহাসড়কে কয়েক বছর ধরে চরম ভোগান্তি চলছে। ঢাকা-সিলেট এবং কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের এই অংশে নানা জায়গায় খানাখন্দ আর ধুলোবালির সমস্যা নিয়ে চলাচল করে পণ্য ও যাত্রীবাহী যানবাহন। নিয়মিত ঘটছে দুর্ঘটনাও। বৃষ্টির জন্য দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। কাজ কবে শেষ হবে তা অনিশ্চিত।
এরই মধ্যে জানা গেল, চার লেন (ফোর লেন) প্রকল্পের একটি প্যাকেজের কাজ হবে না। অর্থাৎ, প্রকল্পের ৩টি প্যাকেজের মধ্যে একটি প্যাকেজ বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে আশুগঞ্জ নৌ-বন্দর থেকে আখাউড়ার তন্তর পর্যন্তই চার লেন সড়ক নির্মাণ কাজ সীমাবদ্ধ থাকবে। বাদ দেওয়া হয়েছে তন্তর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত চার লেন করার কাজ।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রকল্প এলাকায় মহাসড়কের কয়েকটি পয়েন্টে বৃষ্টির পানি জমে আছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর বাইপাস সড়কের বিরাশার বাসস্ট্যান্ডে বিশাল খানাখন্দ; দেখতে জলাশয়ের মত। সেটি পার হতে গিয়ে বাস-ট্রাকের বডি পানিতে ডুবে যাচ্ছে। মালামাল বোঝাই ট্রাক এই জলাশয় থেকে উঠতেও পারছে না। বৃষ্টিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঢাকা-সিলেট এবং কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের কয়েকটি পয়েন্টে এমন অবস্থা কদিন ধরে। চার লেন সড়ক উন্নীতকরণ কাজের জন্য দুর্ভোগের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে বিরাশার ছাড়াও আশুগঞ্জ গোলচত্বর ও বিশ্বরোড গোলচত্বর। এছাড়াও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার রাধিকা থেকে উজানিসার পর্যন্ত বেহাল সড়ক।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ঢাকা-সিলেট এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-কুমিল্লা মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ কাজের জন্যে গত কয়েক বছর ধরে বর্ষায় ভোগান্তির শেষ নেই।
বিশ্বরোডের লালশালুক হোটেলের ম্যানেজার নেছার উদ্দিন বাহার বলেন, ‘১৮ ও ১৯ মে দুই দিন এখানকার অবস্থা খুব নাজুক ছিল। দেখা গেছে কিছুক্ষণ পরপর গাড়ি উল্টে পড়ছে। এতে রোড ব্লক হয়ে যাওয়ায় গাড়ি চলছে না। ড্রাইভার গাড়ির স্টার্ট বন্ধ করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে আছে, নতুবা ঘুমিয়ে পড়েছে। আমাদের হোটেলেও কোনো গাড়ি ঢুকতে পারেনি। এতে আমরাও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।’
সরাইলের কালিকচ্ছ গ্রামের সালাম মিয়া বলেন, ‘ঈদের আগে এমন অবস্থা হলে আর রক্ষা থাকবে না।’
একটি বাসের চালক আলম মিয়া বলেন, ‘দুদিন যে অবস্থা গেছে তাতে গাড়ি চালানোর মতো কোনো পরিস্থিতি ছিল না।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর বাইপাস সড়কের পাশেই মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অফিস। অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নিরূপমা ভৌমিক বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সিএনজি অটোরিকশায় করে ঘাটুরা মোড় থেকে অফিসে ফেরার পথে আমি নিজেই দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিলাম। সিএনজি গর্তে পড়ে গেলে ডানহাতে আঘাত পাই, সেখানে ৫টি সেলাই দিতে হয়েছে। সড়কের এই অবস্থার কারণে প্রশিক্ষণার্থীদের কেউ আসতে পারছে না। ডে-কেয়ারে বাচ্চাদের নিয়ে আসতে পারে না। কাছাকাছি থাকা বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস স্কুলের শিক্ষার্থীদেরও যাওয়া-আসাও বিপদজ্জনক হয়ে পড়েছে।’
চার লেন থেকে বাদ
এক প্যাকেজ
আশুগঞ্জ নৌ-বন্দর থেকে আখাউড়া স্থল বন্দর পর্যন্ত পুরোপুরি চার লেন মহাসড়ক হচ্ছে না। প্রকল্পের ৩টি প্যাকেজের মধ্যে একটি প্যাকেজ বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এদিকে নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে না প্রকল্পের অন্য দুই প্যাকেজের কাজও। এজন্য আরও ২ বছর সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পের ৫ বছর মেয়াদকালে গড়পড়তায় কাজ হয়েছে অর্ধেকের চেয়ে কিছু বেশি।
প্রকল্পের আওতায় ৩টি প্যাকেজে মোট ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার জন্য ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের সাথে চুক্তি হয়। ভারতীয় ঋণ সহায়তা ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা এবছরের ৩০ জুন। শুরু থেকে নানা কারণে পিছিয়ে যায় প্রকল্পের কাজ।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই সড়ক নির্মাণ কাজ অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। ২০২৪ সালের ১০ আগস্ট ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চলে যায় নিজের দেশে। কয়েক মাস পর তারা ফিরলেও কাজ চলতে থাকে ঢিমেতালে।
প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. শামীম আহমেদ বলেন, ‘গত মার্চে ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সভায় প্রকল্পের ৩টি প্যাকেজের মধ্যে ৩ নম্বর প্যাকেজ বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যেটির দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৩০০ কিলোমিটার। এই প্যাকেজে তন্তর থেকে আখাউড়া স্থল বন্দর পর্যন্ত চার লেন সড়ক করার কাজ অর্ন্তভুক্ত ছিল। এই প্যাকেজটি বাদের সিদ্ধান্ত এখন পর্যন্ত বহাল থাকায় আমরা নতুন করে খরচ কমিয়ে সংশোধিত প্রকল্প প্রস্তাব পেশ করছি। বর্তমানে চলমান প্যাকেজ ১ ও ২ এর আওতায় মোট ৩৯ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে উন্নীত হবে। এরমধ্যে আশুগঞ্জ থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় পর্যন্ত ১ নম্বর প্যাকেজের কাজের অগ্রগতি ৬২ ভাগ। দ্বিতীয় প্যাকেজ সরাইল বিশ্বরোড মোড় থেকে আখাউড়া তন্তর পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৫২ ভাগ। তৃতীয় প্যাকেজে কোনো কাজ হয়নি।’
কাজের সার্বিক অগ্রগতি শতকরা ৫৭ ভাগ জানিয়ে প্রকল্প ব্যবস্থাপক বলেন, ‘প্রকল্পের অনুমোদিত মেয়াদ আগামী মাসেই অর্থাৎ জুনে শেষ। সেক্ষেত্রে আমাদের কাজ যেহেতু এখনো বাকি এবং বিভিন্ন কারণে প্রকল্পের কাজ দেরি হয়েছে। সেকারণে আমরা নতুন করে ২ বছর মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছি।’
মো. শামীম আহমেদ বলেন, ‘বর্তমানে যে দুটি প্যাকেজের কাজ হচ্ছে সেটি ঢাকা-সিলেট এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-কুমিল্লা মহাসড়কের অংশ। ৩৯ কিলোমিটারের মধ্যে ৩১ কিলোমিটার সড়ক আমরা চালু করে দিয়েছি। বাকি সাড়ে ৭ কিলোমিটার সড়ক অত্যন্ত দুরাবস্থায় রয়েছে। যেগুলো রিপিয়ার করে আমরা যানবাহন চলাচলের উপযোগী রাখছি। এগুলোতে পারমানেন্ট কাজ করে দুই লেন চালু করার প্রক্রিয়া রয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট