বুলবুল হাসান, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার : পাবনার বেড়া উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত যমুনা নদীতে অবাধে নিষিদ্ধ সুতি জাল দিয়ে রেনু পোনা আহরণ করা হচ্ছে। এতে মারা যাচ্ছে শত-শত দেশিয় প্রজাতির মাছ সহ জলজ প্রাণী। দেশের প্রচলিত মৎস্য আইনে অবৈধ ডিমওয়ালা ও রেণু পোনা মাছ শিকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান থাকলেও এ ব্যপারে স্থানীয় সংশ্লিষ্ট কার্যালয়গুলো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এতে দেশিয় প্রজাতির অনেক মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে ।
জানা গেছে, বৈশাখ মাসের মাঝামাঝি থেকে আষাঢ়-শ্রাবণ মাসের মধ্যে নদ-নদী-খাল-বিলগুলোতে সাধারণত বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ডিম ছাড়ে। এ সময় অবৈধ পোনা সংগ্রহকারীরা সেগুলো সংগ্রহে নেমে পড়েন। পোনা আহরণ কারীরা মশারির চেয়েও সূক্ষ্ম পাতন জাল, সাবার জাল, বেউচি জাল,প্রভৃতি দিয়ে রেণু পোনা ও ডিম সংগ্রহ করে। পুকুরে চাষ উপযোগী রেণুপোনা ও ডিম সংগ্রহ করার পর অন্য প্রাণগুলো অযত্ন ও অবহেলায় নদীর পারে ডাঙায় ফেলে দেওয়া হয় ফলে অন্য প্রানী গুলো মারা যায়। এভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে জীববৈচিত্র্য সেইসাথে পরিবেশে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। দিন-দিন নদী মাছ শুন্য হয়ে পড়ছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে,বেড়া উপজেলার যমুনা নদীর বেশ কয়েকটি স্থানে জাল পেতে রেণুপোনা ও ডিম সংগ্রহ চলছে। এ ছাড়া নদীর বাকে-বাকে অনেক স্থানেই বাঁশের বাঁধ তৈরি করে চলছে ডিমওয়ালা মাছ শিকার। ফলে ধংস হচ্ছে দেশিয় প্রজাতির মাছের বংশ বৃদ্ধি। নেওলাইপাড়া এলাকায় যমুনা নদীতে জাল পেতে রেণুপোনা ও ডিম সংগ্রহের সঙ্গে যুক্ত জেলেরা জানান, দীর্ঘ দিন ধরে তারা এভাবে রেণু পোনা ও ডিম সংগ্রহ করে মাছ চাষিদের কাছে বিক্রি করছেন। জালে বিভিন্ন প্রজাতির পোনা ধরা পড়লেও রুই, কাতলা, মৃগেলর পোনা-ডিম রেখে বাকিগুলো ফেলে দেন তারা। বেলে, টেংরা, পুঁটি, বোয়াল, বাউশ, পাবদার পোনা জালে আটকা পড়লেও চাষের অযোগ্য বলে সেসব ফেলে দেওয়া হয়। পোনা আহরণ থেকে বিরত থাকতে তাদের মৎস্য কার্যালয় বা অন্য কোনো সংস্থা তাদের কখনও বাধা দেয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য অফিসার মোহা. নাসির উদ্দিন জানান মৎস্য সম্পদ রক্ষায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নৌ পুলিশের সাথে কথা বলে দ্রুতই অভিযান পরিচালনা করা হবে । স্থানীয় জনগণ ও জেলেদের কে রেনু পোনা আহরণ থেকে বিরত থাকতে আহবান করেন।
এ বিষয়ে নগরবাড়ি ঘাটের নৌ-পুলিশ ফাঁডির ইনচার্জ বলেন আতিকুল হক বলেন এ বিষয়ে আমাদের অভিযান চলমান আছে। রেনু পোনা আহরণ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে ব্যবস্থা নেব। যমুনায় নিষিদ্ধ সুতি জালে রেনু পোনা শিকারের তথ্যটি আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। এ বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে দ্রুতই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।