উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের উলিপুরে সরকারি নীতিমালার তোয়াক্কা না করে ফ্যাসিস্ট সাবেক এমপি এম এ মতিনের বাড়িতে এখনও সরকারী একটি দপ্তর ভাড়া অবস্থায় রয়েছে। প্রতি মাসে সরকারী দপ্তর হতে ভাড়া বাবদ পলাতক ফ্যাসিস্ট এর প্রতিনিধিকে দেয়া হচ্ছে ৮ হাজার টাকা করে। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার সমালোচনা হলেও সরকারী ওই দপ্তর সেখানেই অবস্থান করছে। এ ধরনের ঘটনা শুধু সরকারী নীতিমালার লঙ্ঘন নয়, সরকারি দপ্তরকে রাজনৈতিক আশ্রয়স্থলে পরিণত করার অপচেষ্টাও বলে মনে করেন সচেতন মহল।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১১ সালের শেষ নাগাদ মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় মহিলা সংস্থা উলিপুর শাখার কার্যক্রম শুরু হয়। শুরু হতে তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেত্রী অধ্যক্ষ নাসিমা বানুর হস্তক্ষেপে জোদ্দার পাড়াস্থ তার বাড়িই অফিস হিসেবে ভাড়া দেয়া হয় ওই সংস্থাকে। জেলা কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে অধ্যক্ষ নাসিমা বানু থাকলেও উপজেলা কার্যালয়ে ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির চেয়ারম্যান বানান আরেক আওয়ামী লীগ নেত্রী রীতা সরকারকে। তখন থেকেই আওয়ামী লীগের পকেটে থাকে জাতীয় মহিলা সংস্থার উলিপুর কার্যালয়। গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর স্থানীয় ছাত্র জনতার রোষানলে পড়ে সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মতিনের জোদ্দারপাড়াস্থ বাড়ী। সেখানে ছাত্র জনতা আগুন ধরিয়ে দেয়ার ফলে ৩ তলা ওই ভবনের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মহিলা সংস্থার বিভিন্ন আসবাব পত্র। পরে মহিলা সংস্থার উলিপুর মাঠ সমন্বয়কারী শংকুর কুমার এর যোগসাজসে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের পিছনে নির্মাণাধীন ভবনের ২য় তলা সংস্কার করে সেখানে কার্যক্রম শুরু করে। লোকচক্ষুর আড়ালে ফ্যাসিস্ট এর বাড়ী পাহাড়ার ভুমিকায় থাকা সরকারী দপ্তর জাতীয় মহিলা সংস্থার এমন কার্যক্রমে সচেতন মহল তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের দাবী, ফ্যাসিস্ট এর বাড়ী হতে সরকারী দপ্তর সরিয়ে নিয়ে সেখানে ভাড়া থাকার কুশীলব মাঠ সমন্বয়কারী শংকর কুমারকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। স্থানীয় প্রশাসনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “এটি নীতিমালার পরিপন্থী। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি।”
জনমনে প্রশ্ন উঠেছে—সরকারি অর্থে পরিচালিত একটি দপ্তর কীভাবে একজন সাবেক ফ্যাসিস্ট এমপির ব্যক্তিগত বাসায় এখনও অবস্থান করছে ? এতে করে সরকারি সম্পদের অপব্যবহার ও ফ্যাসিস্টকে পুনর্বাসনের অভিযোগ আরও জোরালো হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান নয়ন কুমার সাহা বলেন, দ্রুতই সেখান থেকে মহিলা সংস্থার কার্যালয় সরিয়ে নেয়া হবে।