মোঃগোলাম রাব্বী,স্টাফ রিপোর্টারঃ দীর্ঘদিনের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, অপেশাদার আচরণ এবং সাংবাদিক লাঞ্ছনার অভিযোগের পর অবশেষে পটুয়াখালী ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো)-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদুল ইসলাম চৌধুরীকে যশোরে মেরামত কারখানায় বদলি করা হয়েছে।
গত ৩১ জুলাই জারি করা এক দপ্তর আদেশে তাকে পটুয়াখালীর হিসাব ও বিতরণ বিভাগ থেকে সরিয়ে যশোর আঞ্চলিক সেমাসম কার্যালয়ে পদায়ন করা হয়।
নির্দেশনা অনুযায়ী, তিনি আগামী ৩ আগস্টের মধ্যে ছাড়পত্র গ্রহণ করে ৪ আগস্ট থেকে নতুন কর্মস্থলে যোগ দেবেন। একই আদেশে যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মফিজুর হোসেনকে পটুয়াখালীতে বদলি করা হয়েছে।
এর আগে রাশেদুল ঝিনাইদহে দায়িত্ব পালনকালে রাশেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ সংযোগে বিলম্ব, গ্রাহকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, অতিরিক্ত বিল, তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের যেরে অকারণে সাংবাদিকদের বাসার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা, পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেওয়া এবং অফিসের কর্মীদের সঙ্গে কর্তৃত্ববাদী আচরণের একাধিক অভিযোগ উঠে আসে। তিনি দায়িত্ব পালনকালে একাধিক বিতর্কিত ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন। সে সময় টেলিভিশনের ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি লোটাস রহমান সোহাগ বিদ্যুৎ বিভাগের দুর্নীতি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে অফিসে ডেকে নিয়ে তার ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভাঙচুর করেন রাশেদুল ইসলাম। এতে সাংবাদিক সমাজ প্রতিবাদ জানিয়ে বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।
এছাড়া ঝিনাইদহে কর্মরত থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে সরকারি গাছ বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ, সরকারি মালামাল অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়, বিদ্যুৎ সংযোগে ঘুষ গ্রহণ এবং সাধারণ গ্রাহকদের হয়রানির মতো অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। মামলা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
রাশেদুলের বদলিকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালীর সেবা গ্রহীতা ও সচেতন মহলের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। অনেকেই মনে করছেন, বিদ্যুৎ বিভাগের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবে তার সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে অপেশাদার কর্মকাণ্ড পুরো প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
তবে নতুন নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে যশোর থেকে বদলি হয়ে আসা মো. মফিজুর হোসেন দায়িত্ব গ্রহণের পর পটুয়াখালীতে বিদ্যুৎ সেবার মানোন্নয়ন এবং দুর্নীতি ও হয়রানি বন্ধ হবে বলে আশা করছেন স্থানীয় গ্রাহকরা।