সোহেল রানা:
উপজেলার গ্রামীণ মানুষের সরলতা ও আর্থিক অসচ্ছলতাকে পুঁজি করে ‘সমাজসেবা কর্মকর্তা’ পরিচয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন মাইনুল ইসলাম (২৫)। অবশেষে কুড়িগ্রামের উলিপুরে জনতার হাতে ধরা পড়েন তিনি। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে উলিপুর থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মাইনুল ইসলাম উপজেলার কিশামত মালতিবাড়ি এলাকার নুর হোসেনের ছেলে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে সমাজসেবা অফিসের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ধামশ্রেণীর, অনন্তপুর, বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা কিংবা অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিতেন। সেই সূত্রে অসহায় মানুষদের কাছ থেকে তিনি জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি এবং সর্বোপরি মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিতেন।
আজ বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের একটি গ্রামে গিয়ে প্রতারকের আচরণে সন্দেহ জাগে স্থানীয়দের মধ্যে। স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি তার পরিচয় যাচাই করার চেষ্টা করলে তিনি এলোমেলো তথ্য দিতে থাকেন সমাজসেবা অফিসের মাহমুদুল ইসলাম নামে পরিচয় দেন । একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা তাকে আটকে রেখে স্থানীয় সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগ করলে তার তাকে আটক করতে বলেন পরে অফিসে থেকে লোক পাঠালে তাকে অফিসে নিয়ে আসে।
সেখানে জিজ্ঞাসাবাদে তার প্রতারণার প্রমাণ মেলে। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে জানানো হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নয়ন কুমার সাহা এবং উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জিল্লুর রহমানকে।
এ ঘটনায় বুড়াবুড়ি ইউনিয়ন সমাজসেবা সহকারী বিপুল মিয়া (৩০), পিতা আবুল হোসেন বাদী হয়ে উলিপুর থানায় একটি নিয়মিত মামলা করেন। থানার ওসি মো. জিল্লুর রহমান জানান, “মাইনুল ইসলামের বিরুদ্ধে আইনগত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান বলেন, “আমাদের কোনো কর্মকর্তা হিসেবে মাইনুল ইসলাম নিযুক্ত নন। তার পরিচয় সম্পূর্ণ ভুয়া। আমরা ধারণা করছি, সে দীর্ঘদিন ধরে একাধিক ব্যক্তিকে প্রতারণার শিকার করেছে। ইতোমধ্যে অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঐ প্রতারণার ফাঁদে পড়ে। বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে অভিযোগ আসছিল। আজ বুড়া-বুড়ি ইউনিয়নে পানাতিপাড়া নামক স্থানে প্রতারণা করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক হয়।
এ বিষয়ে উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) নাজমুস সাকিব সজিব বলেন, আসামিকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে এবং নিয়মিত মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।