1. info@dainikgonatadanta.com : দৈনিক গণতদন্ত :
শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫, ১২:১৯ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞাপন:
জরুরী নিয়োগ চলছে, দেশের প্রতিটি বিভাগীয় প্রতিনিধি, জেলা,উপজেলা, স্টাফ রিপোর্টার, বিশেষ প্রতিনিধি, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, ক্যাম্পাস ও বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি বা সাংবাদিক নিয়োগ চলছে।

গণভবনের অপচয়ে ছয় বছরের রাজত্ব: নির্বাহী প্রকৌশলী শাহ আলম ফারুকের কমিশন সাম্রাজ্য

রিপোর্টারের নাম :
  • প্রকাশিত: বুধবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৪৮ বার পড়া হয়েছে

পর্ব- ০১

গণপূর্ত বিভাগের ভেতর জমে থাকা পচনের গন্ধ এখন প্রকাশ্যে। সেই গন্ধের কেন্দ্রে রয়েছেন বাগেরহাট গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহ আলম ফারুক চৌধুরী, যিনি টানা ছয় বছর ঢাকার গণপূর্ত বিভাগ-২ এ একই পদে থেকে ক্ষমতার রমরমা প্রভাব খাটিয়ে গড়ে তুলেছিলেন দুর্নীতির এক অদম্য সাম্রাজ্য।

অভিযোগের মূল সুর, গণভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাজসজ্জা ও আপ্যায়ন খাতে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার অস্বচ্ছ ব্যয়ের পেছনে শাহ আলম ফারুকই ছিলেন মূল কারিগর।

গণপূর্তের ঘুষের বাজারে তার নাম উচ্চারিত হয় “কমিশন কিং” হিসেবে। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা শেখ সেলিমের ঘনিষ্ঠতা ব্যবহার করে ঠিকাদারদের কাছ থেকে নিয়মিতভাবে ২০ শতাংশ কমিশন আদায় করতেন এই প্রকৌশলী। ঠিকাদারি জগতে তার একক কর্তৃত্বের ফলে সরকারি প্রকল্পের নামেই গড়ে উঠেছিল কমিশন সিন্ডিকেট। যেখানে প্রকল্পের টাকা যেতো রাজনীতি, আত্মীয়তা আর ক্ষমতার দালানে।

ঢাকায় দীর্ঘ মেয়াদে পদ আঁকড়ে রেখে তিনি সরকারি নিয়ম ভেঙে বদলির আদেশকে তুচ্ছ করেছেন। বাগেরহাটে বদলির পরও সপ্তাহে দুই দিনের বেশি অফিসে অনুপস্থিত থেকে ঢাকায় রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক দফতরে পুনরায় পদায়নের জন্য অবিরাম তদবিরে ব্যস্ত ছিলেন তিনি।

খুলনা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনোয়ারুল নজরুলের সঙ্গে অদৃশ্য আঁতাতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে শতকরা ৭০ ভাগ টেন্ডার নিয়মবহির্ভূত OTM পদ্ধতিতে আহ্বান করা হয়েছে, যা সরকারি ক্রয়বিধির সরাসরি লঙ্ঘন।

আরও বিস্ময়কর তথ্য মিলেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে মাত্র দুই দিনের মধ্যে ১০ কোটি টাকার বিল উত্তোলন, ক্লোজড টেন্ডার উন্মুক্তকরণ, এবং ই-জিপি পোর্টালে নথি জালিয়াতির একাধিক প্রমাণ এখনো দৃশ্যমান। গণভবনের সাজসজ্জা ও প্যান্ডেল তৈরির নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

শেখ পরিবারের ঘনিষ্ঠ ঠিকাদার পিয়ারু সর্দারকে ১২ মাসে ১৩ বার বিল প্রদান করে সরকারি অর্থ লোপাটের নজির গড়েছেন তিনি।
পিয়ারুর নাতি তানভীর ও রাজনৈতিক সহচর এ আরাফাতের সহযোগীরা পেয়ে গেছেন কোটি কোটি টাকার কাজ। যেখানে মান, প্রক্রিয়া বা স্বচ্ছতার কোনো ছিটেফোঁটাও ছিল না। অভিযোগ আরও আছে, শাহ আলম ফারুক ঢাকায় একাধিক বাড়ি, বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, কুমিল্লায় ২৩ একর জমি, এবং নাম-বেনামে শত শত কোটি টাকার ব্যাংক ব্যালান্স অর্জন করেছেন।

বদলির পরও নিয়মিত অফিসে না গিয়েও ভুয়া ডিউটি রিপোর্ট তৈরি করে সরকারি অর্থ লোপাটের মতো জঘন্য অপরাধের অভিযোগও তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত হয়েছে। প্রাক্কলন অনুমোদনের আগেই দরপত্র আহ্বান, ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারদের লাভবান করা এবং ঢাকায় পুনঃপদায়নের জন্য রাজনৈতিক মহলে তদবির চালানো। সব মিলিয়ে শাহ আলম ফারুক এখন গণপূর্ত বিভাগের দুর্নীতির প্রতীকে পরিণত।
প্রতিবেদকের হাতে আসা সরকারি নথি, ই-জিপি রেকর্ড ও অভ্যন্তরীণ সূত্রের তথ্যে স্পষ্ট, শাহ আলম ফারুকের ক্ষমতার ছায়ায় ঢাকা গণপূর্ত বিভাগে দুর্নীতি এক অদৃশ্য রাষ্ট্রব্যবস্থায় পরিণত হয়েছিল।

এ বিষয়ে কথা হলে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহ আলম ফারুক চৌধুরী অভিযোগগুলো অস্বীকার করেন।

চলবে….

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট