
মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
বেতন বৈষম্য নিরসনসহ তিন দফা দাবিতে পরীক্ষা গ্রহণ না করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কতিপয় সহকারী শিক্ষক। উপজেলা শিক্ষা অফিসের সামনে এ কর্মসূচি পালনের ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
দেশব্যাপী চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে মুরাদনগর উপজেলার ২০৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির আওতায় পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেন। গুরুত্বপূর্ণ বার্ষিক পরীক্ষার মাঝপথে এ কর্মসূচি চলায় পরীক্ষার কার্যক্রম নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। ফলে অভিভাবক মহলে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অনেক অভিভাবক এ কর্মসূচিকে ‘শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে দাবি আদায়ের চেষ্টা’ বলে মন্তব্য করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, “এটি চরম অন্যায়। নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরুর পর আন্দোলন করলে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হতো না।”
সরকারি কর্মচারী বিধি লঙ্ঘন হলেও কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে আগেই কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল যে, বার্ষিক পরীক্ষায় কোনো ধরনের শৈথিল্য বা অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে সেই নির্দেশনার পরও পরীক্ষা চলাকালীন কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালিত হওয়ায় স্থানীয় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা দেখা দিয়েছে।
আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী সহকারী শিক্ষক আব্দুল জলিল ও নেছার উদ্দিন দাবি করেন, “আমরা স্কুল ও পরীক্ষার কার্যক্রম ঠিক রেখেই আন্দোলন করেছি। পরীক্ষায় কোনো সমস্যা হয়নি।” তবে পরীক্ষা চলাকালে উপজেলা শিক্ষা অফিসে স্মারকলিপি দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা এড়িয়ে গিয়ে মোবাইল ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক জানান, “পরীক্ষার সময় আন্দোলনে অংশ না নিতে শিক্ষকদের বারবার অনুরোধ করা হয়েছিল। তারপরও তারা একদিন এসে দাবি-দাওয়া উল্লেখ করে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ক্ষতির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, গত ৭ ডিসেম্বর (রোববার) থেকে শিক্ষকরা তাঁদের কর্মবিরতি স্থগিত করে আপাতত বিদ্যালয়ে ফিরে গেছেন।